ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টকে বরখাস্ত করেছেন। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রী বিশ্বাসের সংকট দেখিয়ে তাকে অপসারণ করেন। তার স্থলে ঘনিষ্ঠ মিত্র ইসরায়েল কাটজকে গাজা ও লেবাননে চলমান যুদ্ধে নেতৃত্বের জন্য নিযুক্ত করেছেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
সমালোচকেরা নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক স্বার্থকে নিরাপত্তার উপরে স্থান দেওয়ার অভিযোগ করে আসছেন। বিশেষত যখন ইসরায়েল ২৬ অক্টোবরের ইরানে হামলার ঘটনায় ইরানি প্রতিশোধের আশঙ্কায় রয়েছে। গ্যালান্টের অপসারণের পর প্রতিবাদে ইসরায়েলিরা মহাসড়ক অবরোধ করে এবং বিভিন্ন স্থানে আগুন জ্বালিয়ে প্রতিবাদ জানায়।
নেতানিয়াহু পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা ইসরায়েল কাটজের স্থলে গিডিওন সা’রকে নিয়োগ দিয়েছেন। গ্যালান্ট ও নেতানিয়াহু উভয়ই ডানপন্থি লিকুদ দলের সদস্য। তবে গাজায় হামাসের সঙ্গে চলমান ১৩ মাসব্যাপী যুদ্ধে দুজনের মধ্যে মতপার্থক্য দেখা দিয়েছে। বিশেষত, গ্যালান্টের সাম্প্রতিক কিছু বিবৃতি সরকার ও মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের বিরোধী ছিল। এগুলো নেতানিয়াহুকে ক্ষুব্ধ করেছে।
গ্যালান্ট এক বিবৃতিতে বলেন, ইসরায়েলের নিরাপত্তা সবসময়ই আমার জীবনের লক্ষ্য ছিল ও থাকবে।
নতুন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ সামাজিক যোগাযোমাধ্যমে জানিয়েছেন, ইসরায়েলি নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য আমিই দায়িত্বভার গ্রহণ করছি।
তিনি গাজায় বন্দি ইসরায়েলি জিম্মি এবং হামাস ও হিজবুল্লাহকে নির্মূলের অঙ্গীকার করেন। পাশাপাশি, কাটজ সাম্প্রতিককালে জাতিসংঘের মহাসচিবকে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার নিন্দা না করার জন্য ইসরায়েলে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেন এবং লেবাননে ২১ দিনের যুদ্ধবিরতির মার্কিন-ফরাসি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, নেতানিয়াহুর ওপর কট্টরপন্থি সহযোগীদের চাপ রয়েছে। এটিকে গ্যালান্টের বরখাস্তের পেছনের অন্যতম কারণ। নেতানিয়াহুর মন্ত্রিসভার সদস্য ইতামার বেন-গভীর এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়ে বলেছেন, গ্যালান্ট জয়ের বিশ্বাসে গভীরভাবে সীমাবদ্ধ ছিলেন না।
তবে বিরোধী নেতা ইয়ার লাপিদ এই পদক্ষেপকে ‘যুদ্ধের মধ্যে একটি উন্মত্ত কাজ’ বলে অভিহিত করেছেন।
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রাক্কালে ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বুধবার ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন অঞ্চলে কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটানোর চেষ্টা করবেন বলে জানা গেছে।