সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগকেন্দ্রিক মীমাংসিত বিষয়ে নতুন করে কোনো বিতর্ক সৃষ্টি না করার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। তিনি বিতর্ক সৃষ্টি করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অস্থিতিশীল কিংবা বিব্রত করা থেকে বিরত থাকার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
আজ সোমবার রাষ্ট্রপতির কার্যালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানানো হয়। এতে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ বিষয়ে রাষ্ট্রপতিকে উদ্ধৃত করে বিভিন্ন গণমাধ্যমে যে প্রচার চালানো হয়েছে, তা জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছে। এ বিষয়ে রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট বক্তব্য হলো, ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবের মুখে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগ, সংসদ ভেঙে দেওয়া এবং বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাংবিধানিক বৈধতার ওপর যত ধরনের প্রশ্ন জনমনে উদ্রেক হয়েছে, সেগুলোর উত্তর আপিল বিভাগের আদেশে প্রতিফলিত হয়েছে।
সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি গত ৮ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের মতামত চান। এর পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন ও উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করানো যেতে পারে। এরপরই ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের শপথ পড়ানো হয়। এর আগে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান।
সম্প্রতি দৈনিক মানবজমিনের সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীর এক লেখায় রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, তিনি শুনেছেন শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। কিন্তু তাঁর কাছে কোনো দালিলিক প্রমাণ নেই।
এ খবর সামনে এলে রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়। আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল আজ সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি যে বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র পাননি, এটা হচ্ছে মিথ্যাচার এবং এটা হচ্ছে ওনার শপথ লঙ্ঘনের শামিল। কারণ, তিনি নিজেই ৫ আগস্ট রাত ১১টা ২০ মিনিটে পেছনে তিন বাহিনীর প্রধানকে নিয়ে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ওনার কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন এবং উনি তা গ্রহণ করেছেন।’
আসিফ নজরুল বলেন, ‘যদি তিনি (রাষ্ট্রপতি) এই বক্তব্যে অটল থাকেন, তাহলে ওনার রাষ্ট্রপতি পদে থাকার যোগ্যতা আছে কি না, সেটা আমাদের উপদেষ্টামণ্ডলীর সভায় ভেবে দেখতে হবে।’