পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক বিক্ষোভ চলাকালীন মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনের তদন্তে অন্তর্বর্তী সরকার হস্তক্ষেপ করবে না। তারা যাতে স্বাধীনভাবে তদন্ত পরিচালনা করতে পারে, তা আমরা নিশ্চিত করতে চাই। গতকাল মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, জাতিসংঘের তদন্ত দল তাঁর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছে। এ সময় তারা শিগগির তদন্ত শুরু করার ইচ্ছার কথা জানিয়েছে। নিরপেক্ষতার সঙ্গে কাজ করতে চান বলে তারা প্রচার এড়াতে পছন্দ করছেন। তদন্তে সরকার সহায়তা দেবে। তিনি স্পষ্ট করেন, ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং দল সম্প্রতি দেশে এসেছে। এখনও তারা আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি।
এদিকে জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর জোর দিয়ে বলেছে, ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন কোনো ফৌজদারি তদন্ত নয় এবং এটি যে কোনো জাতীয় বিচারিক প্রক্রিয়া থেকে আলাদাভাবে কাজ করে। তদন্তটি গোপনীয় এবং তদন্তের সময় দলটি গণমাধ্যমের সঙ্গে জড়িত হবে না।
জাতিসংঘ মানবাধিকার অফিসের একজন মুখপাত্র এর আগে বলেন, ‘আমরা সত্য অনুসন্ধান প্রক্রিয়ায় গোপনীয়তার প্রতি সম্মান প্রদর্শনের আবেদন করছি।’
ইউএন হিউম্যান রাইটস দপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং দলকে তথ্য প্রতিষ্ঠা, দায়িত্ব চিহ্নিত করা, মূল কারণ বিশ্লেষণ, অতীতের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার এবং এর পুনরাবৃত্তি রোধে বাংলাদেশের জন্য সুনির্দিষ্ট সুপারিশ পেশ করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
ব্যক্তি, গোষ্ঠী ও সংস্থাগুলোকে বিক্ষোভের সময় মানবাধিকার লঙ্ঘন ও অপব্যবহার সম্পর্কিত তথ্য সরবরাহ করার জন্য বলা হয়েছে। তথ্য পাঠাতে হবে OHCHR-FFTB- [email protected] ঠিকানায়। তদন্ত দলটি ভুক্তভোগী, আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তা, চিকিৎসা পেশাজীবী ও প্রত্যক্ষর্শীদের সাক্ষাৎকার নেবে। ঘটনাস্থলের পরীক্ষা ও তথ্য বিশ্লেষণের পর জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর একটি বিশদ মানবাধিকার প্রতিবেদন প্রকাশ করবে। যাতে ফলাফল, উপসংহার ও সুপারিশ থাকবে।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সহায়তার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত আইওএমের
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে সহায়তার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। আইওএম বাংলাদেশের মিশনপ্রধান আবদুসাত্তর এসোয়েভ গতকাল ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎকালে এই অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়েছে।
বৈঠকে উপদেষ্টা বিভিন্ন গন্তব্য ও ট্রানজিট দেশগুলোতে বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় আইওএমের অব্যাহত প্রচেষ্টার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। এ সময় গ্লোবাল কমপ্যাক্ট অন মাইগ্রেশনের (জিসিএম) চ্যাম্পিয়ন হিসেবে নিরাপদ, সুশৃঙ্খল ও নিয়মিত অভিবাসন প্রচারে বাংলাদেশের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন এসোয়েভ।