আগে থেকেই ধারণা করা হচ্ছিল নাজমুল হাসান পাপন পদত্যাগ করলে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি হবেন সাবেক অধিনায়ক ফারুক আহমেদ। অবশেষে হলোও তাই, পাপনের পদত্যাগের পর বুধবার (২১ আগস্ট) বোর্ড সভায় ফারুক আহমেদকে বিসিবির সভাপতি নির্বাচিত করা হয়েছে।
এর আগে বোর্ড সভার শুরুতেই পদত্যাগের ঘোষণা দেন নাজমুল হাসান পাপন। ২০১২ সালে সভাপতি মনোনয়ন এবং ২০১৩ সালের নির্বাচনের পর এই আসনে বসেন তিনি।
এদিন বেলা ১১টায় ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে বিসিবির বোর্ড সভা শুরু হয়। তবে মন্ত্রণালয়ে বোর্ড সভা ডাকায় বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। যদিও বিসিবি রাতে খুদেবার্তায় গণমাধ্যমকে জানায়, বুধবার সচিবালয়ের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বিসিবির বোর্ড পরিচালকদের একটি জরুরি সভা ডাকা হয়েছে। বিসিবি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কে দেশের পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে গুরুত্বপূর্ণ এই সভার ব্যবস্থা করার অনুরোধ করেছে।
এর আগে সকালে বোর্ড সভায় অংশগ্রহণ করতে মন্ত্রণালয়ে আসেন ফারুক আহমেদ ও নাজমুল আবেদীন ফাহিম। এ ছাড়া ইনাম ও মাহবুব আনামকেও দেখা গেছে। পাশাপাশি আম্পায়ার্স কমিটির সদস্য ইফতেখার আহমেদ মিঠুও যোগ দিয়েছেন বৈঠকে।
অন্যদিকে, পরিচালকদের মধ্যে সভায় উপস্থিত আছেন আকরাম খান, সাইফুল আলম স্বপন, ফাহিম সিনহা, খালেদ মাহমুদ সুজন ও সালাউদ্দিন চৌধুরী। বিসিবির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সভায় পরিচালক বোর্ডের সদস্যদের অন্তত ৯ জন উপস্থিত থাকলেই চলবে।
উল্লেখ্য, নবনির্বাচিত সভাপতি ফারুক আহমেদ খেলোয়াড় জীবন শেষে ২০০৩ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাচকের দায়িত্ব পালন করেন। এই সময়ে তিনি সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, তামিম ইকবালদের মতো কিছু তরুণের মধ্যে অসীম সম্ভাবনা দেখে তাদের জায়গা করে দেন জাতীয় দলে। যখন তিনি দায়িত্ব ছাড়েন তখন তামিম-মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ-সাকিবরা হয়ে উঠছেন দলের ভরসা।
এরপর দ্বিতীয় মেয়াদে ২০১৩ সালে তিনি প্রধান নির্বাচকের দায়িত্ব পান। কিন্তু বিসিবির দ্বি-স্তরের নির্বাচক কমিটি, স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম, সীমাহীন দুর্নীতির প্রতিবাদে ২০১৬ সালে পদত্যাগ করেন তিনি। যা বাংলাদেশের ক্রিকেট অঙ্গনের ইতিহাসও বটে।
তার অধীনে ২০১৫ বিশ্বকাপে সাফল্যের পর ঘরের মাঠে পাকিস্তান, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের দুর্দান্ত সিরিজ জয় হয়। কিন্তু হঠাৎ করেই বোর্ডে দেখা যায় বিশৃঙ্খলা, কাজের মধ্যে হস্তক্ষেপ শুরু হয়। সিস্টেমেও গলদ দেখা দেয়, শুরু হয় বোর্ড কর্তাদের হস্তক্ষেপ। ২০১৬ সালে দায়িত্ব ছাড়ার পর এসব অনিয়মের কথা বিভিন্ন সময় জানিয়েছিলেন স্পষ্টভাষী ফারুক আহমেদ।
পাপন পরবর্তীতে বিসিবির দায়িত্ব নেয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক ফারুক আহমেদ এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, আমি ৩০ বছর বাংলাদেশের ক্রিকেটে সময় দিয়েছি। যদি আমার কোনো সুযোগ থাকে, যদি আমি মনে করি কাজ করার পরিবেশ তৈরি হয়েছে, তাহলেই আমি আসব। কিন্তু শুধু খেলোয়াড় সিলেকশনে আমার আসার কোনো ইচ্ছা নেই। কাজ করলে যেন আমি আরও বড় পরিসরে কাজ করতে পারি। তাহলেই পুনরায় ক্রিকেটের সঙ্গে যুক্ত হতে পারি।