বিভ্রান্তি তৈরি হওয়ায় সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বিদ্যুতের মিটার নিয়ে হাজির হয়েছেন কমিটির একজন সংসদ সদস্য। বিদ্যুৎ–সংযোগ না থাকলেও ওই মিটারে লাল বাতি জ্বলে। অবশ্য বৈঠকে বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, কারিগরি ত্রুটির কারণে এমনটি হতে পারে, কিন্তু এতে গ্রাহকের অতিরিক্ত বিল আসবে না।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে বিদ্যুতের একটি মিটার উপস্থাপন করেন কমিটির সদস্য (সিরাজগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য) তানভীর শাকিল জয়।
বৈঠক শেষে তানভীর শাকিল প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর নির্বাচনী এলাকার কিছু গ্রাহক তাঁর কাছে অভিযোগ করেন, বিদ্যুতের সংযোগ না থাকলেও মিটারে লাল বাতি জ্বলে। এটি নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। এ কারণে তিনি ওই ধরনের একটি মিটার নমুনা হিসেবে বৈঠকে উপস্থাপন করেন। মন্ত্রণালয় বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কারিগরি ত্রুটির কারণে অনেক সময় এমনটি হতে পারে। তবে এতে অতিরিক্ত বিল আসবে না। কমিটি এ বিষয়টি ভালোভাবে যাচাই করে দেখে আগামী বৈঠকে জানাতে বলেছে। যাতে এটি নিয়ে বিভ্রান্তি না ছড়ায়, সে বিষয়েও মন্ত্রণালয়কে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। যদি ত্রুটির কারণে বাতি জ্বলে কিন্তু বিল না ওঠে থাকে, তাহলে তা গ্রাহকদের জানাতে হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বৈঠকে বিদ্যুতের মিটারের ত্রুটি ও ভুতুড়ে বিল নিয়ে আলোচনা হয়। একাধিক সদস্য বলেন, তাঁরা অভিযোগ পেয়েছেন অনেক গ্রাহকের বিদ্যুৎ বিল স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি আসছে। এটি সংশোধন করতে গেলে অনেক ক্ষেত্রে গ্রাহকেরা হয়রানির শিকার হন। বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এখন সারা দেশে সাড়ে তিন কোটির বেশি বিদ্যুতের মিটার আছে। এর মধ্যে পাঁচ লাখের মতো মিটারে ত্রুটি আছে। এ ছাড়া লোডশেডিং নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শিগগির পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।
বৈঠক শেষে সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিদ্যুতের প্রিপেইড মিটারে গ্রাহকের আস্থা অর্জন ও নিম্নমানের মিটার কেনা হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখার সুপারিশ করেছে কমিটি। এ ছাড়া বৈঠকে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ও বোর্ডের মধ্যে বিদ্যমান সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে টেকসই সমাধানের জন্য কমিটি গুরুত্বারোপ করে।
বিদ্যুতের ভুতুড়ে বিল নতুন কিছু নয়। তবে সম্প্রতি এই অভিযোগ বেড়েছে। গত ২০ জুন জাতীয় সংসদে এ–সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছিলেন, কারিগরি ও অকারিগরি ত্রুটির কারণে অনেক সময় ভুতুড়ে বিলের ঘটনা ঘটতে পারে। বিদ্যুৎ বিল যাতে যথাযথ হয়, সে বিষয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
আজকের বৈঠকে সংসদীয় কমিটির সভাপতি মু. জিয়াউর রহমানের সভাপতিত্বে কমিটির সদস্য মো. আবু জাহির, তানভীর শাকিল, সেলিম মাহমুদ, আব্দুর রউফ, মো. ওমর ফারুক ও কানন আরা বেগম অংশ নেন।