রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় সাদিক অ্যাগ্রোর খামারে অভিযান চালিয়ে ছয়টি ব্রাহমা জাতের গরু জব্দ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ বুধবার দুদকের সহকারী পরিচালক আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে খামারে অভিযান চালানো হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বাসনা আক্তার।
দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম সাদিক অ্যাগ্রোতে অভিযান চালিয়ে গরু জব্দের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, গরুগুলো প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের জিম্মায় রাখা হয়েছে।
দুদক সূত্র জানায়, তথ্যের ভিত্তিতে সাদিক অ্যাগ্রোতে দুদকের দল গিয়ে ছয়টি ব্রাহমা গরুর সন্ধান পায়, যা যুক্তরাষ্ট্র থেকে আনা হয়েছে। ব্রাহমা গরু আমদানি নিষিদ্ধ। অভিযানের সময় সাদিক অ্যাগ্রোর মালিক ও ব্যবস্থাপক—কাউকে পাওয়া যায়নি।
ব্রাহমা জাতের গরুর মাংস বেশি হয়। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জাতটির উৎপত্তি ভারতে। পরে যুক্তরাষ্ট্রে আরও দুই থেকে তিনটি জাতের সংমিশ্রণে এটিকে উন্নত করা হয়। দুই থেকে আড়াই বছরের দেশি গরুর ওজন যেখানে ২৫০ থেকে ৩৫০ কেজি হয়, সেখানে ব্রাহমা জাতের গরুর ওজন হয় ৮০০ থেকে ১ হাজার কেজি।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলেন, ব্রাহমা গরু বাংলাদেশে পালনের অনুমতি দেওয়া হলে দুধ বেশি দেওয়া গরুর পালন কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই ব্রাহমা নিষিদ্ধ করে রাখা হয়েছে।
অবশ্য সাদিক অ্যাগ্রোর বিরুদ্ধে ব্রাহমা গরু আমদানির অভিযোগ রয়েছে। ২০২১ সালের ৫ জুলাই তাদের আমদানি করা ১৮টি ব্রাহমা জাতের গরু ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জব্দ করে ঢাকা কাস্টম হাউস। পরে সেগুলো প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হেফাজতে সাভারের কেন্দ্রীয় গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামারে রাখা হয়।
সাদিক অ্যাগ্রো গরু জব্দের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিট করেছিল। তবে উচ্চ আদালতের রায় তাদের বিপক্ষে যায়। অবশ্য গত পবিত্র রমজান মাসের আগে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কৌশলে ১৫টি গরু সাদিক অ্যাগ্রোকে দেয়। তিনটি মারা গিয়েছিল।
ব্রাহমা গরুগুলো সাদিক অ্যাগ্রো এবারের পবিত্র ঈদুল আজহার বাজারে চড়া দামে বিক্রি করে। এরপর দুদক ১ জুলাই প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের খামার ও সাদিক অ্যাগ্রোতে অভিযান চালিয়েছিল। আজ আবার অভিযান চালানো হয়।