ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে টানা বৃষ্টিতে তাপমাত্রা কমে এলেও আবার বাড়তে শুরু করেছে তাপমাত্রা। শনিবার (১ জুন) দেশের প্রায় ১৬ জেলার ওপর দিয়ে তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে। তবে দেশের আকাশে মৌসুমি বায়ুর প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করেছে। এর প্রভাবে আগামী সোমবার (৩ জুন) প্রায় সারা দেশে বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিপ্ততর।
শনিবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে যশোরে। এদিন ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজারের টেকনাফে দেশের সর্বোচ্চ ১৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, মৌসুমি বায়ু দেশের ভেতরে ঢুকতে শুরু করেছে। এখনো বর্ষা না এলেও এর প্রভাব পড়তে শুরু করবে শিগগিরই। আগামী সোমবার প্রায় সারা দেশে বৃষ্টি হতে পারে।
শনিবার সন্ধ্যায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে ঢাকা, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, মাদারীপুর, রাজশাহী, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, রংপুর, মৌলভীবাজার, চাঁদপুর, নোয়াখালী, বাগেরহাট, যশোর, বরিশাল, পটুয়াখালী ও ভোলা জেলার ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা কিছু কিছু জায়গা হতে প্রশমিত হতে পারে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
রোববার (২ জুন) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায়; ঢাকা, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতিভারি বর্ষণ হতে পারে।
রোববার সন্ধ্যা থেকে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়; ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের অনেক জায়গায় এবং খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হতে পারে। এসময়ে সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে।
সিনপটিক অবস্থা সম্পর্কে অধিদপ্তর বলেছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চল হয়ে উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু ঢাকা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ, রংপুর এবং রাজশাহী বিভাগ পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু আরো অগ্রসর হওয়ার জন্য পরিস্থিতি অনুকূলে রয়েছে।
এ ছাড়াও বর্ধিত পাঁচ দিনের পূর্বাভাসে দেশের উত্তরাঞ্চলে বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমতে পারে।
এদিকে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
শনিবার কুশিয়ারা নদীর অমলশীদ পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ১৯৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একই নদীর শেওলা পয়েন্টের পানি ৯ সেন্টিমিটার, সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টের পানি ৮৫ এবং সিলেট পয়েন্টের পানি ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
কেন্দ্রের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি স্থিতিশীল আছে— যা আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। এদিকে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সুরমা-কুশিয়ারা নদীগুলোর পানি স্থিতিশীল আছে এবং অন্যান্য প্রধান নদীরপানি কমছে।