ভাগ্নের বিয়ের কেনাকাটা করতে ভাজিতি শেফালি আক্তারকে (৪০) নিয়ে শহরে এসেছিলেন ময়মনসিংহ সদরের উজান বাড়েরা এলাকার আবদুর রহমান (৫৫)। বাজার নিয়ে গেলে রাতেই বিয়ে হওয়ার কথা ছিল ভাগনে খোকার। কিন্তু আর বাড়ি ফেরা হয়নি তাদের। নগরীর পঁচাপুকুর পাড় এলাকার রেলক্রসিংয়ে অটোরিকশায় (মিশুক) ট্রেনের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারিয়েছেন চাচা-ভাতিজি। তারা অটোরিকশার যাত্রী ছিলেন।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০টার দিকে ওই এলাকায় রেললাইনে উঠে যাওয়া অটোরিকশাকে ধাক্কা দিলে তারা ট্রেনে কাটা পড়েন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঢাকা থেকে জামালপুরগামী ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস ট্রেনটি ময়মনসিংহ জংশন অতিক্রম করে জামালপুরের দিকে যাচ্ছিল। জংশনের কাছাকাছি এলাকায় মিন্টু কলেজ ও নতুন বাজার রেলক্রসিংয়ের মাঝে পঁচা পুকুরপাড় এলাকায় ক্রসিংয়ে ট্রেনটি একটি অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয়। এ সময় ট্রেনটি অটোরিকশার দুই যাত্রীকে প্রায় ১০০ গজ টেনে নিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই নারীসহ দুইজনের মৃত্যু হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ক্রসিংয়ে ব্যারিয়ার না ফেলার কারণে অটোরিকশাটি রেললাইনে ঢুকে যায়। এসময় রেললাইন পার হতে না পারায় ট্রেনটি ধাক্কা দেয়। দুর্ঘটনার পর তড়িঘড়ি করে ব্যারিয়ার ফালানো হয়।
ময়মনসিংহ রেলওয়ে থানার ওসি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে থানার নেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
রেলওয়ের উর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী বলেন, আমাদের গেটম্যান ছিল। উপরে বিভিন্ন ক্যাবল তারের কারণে একপাশে ব্যারিয়ার পরেছিল কিন্তু আরেকপাশে পড়ে নাই। ওই পাশ দিয়ে রিকশাটি ঢুকিয়ে দেওয়ায় এ দুর্ঘটনাটি ঘটে বলে আমরা জানতে পেরেছিল। এ ঘটনায় ছয় সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এদিকে ট্রেনটি আটকা পড়ায় জামালপুর-ময়মনসিংহ রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রাত ১২টায় ট্রেনটি জামালপুরের উদ্দেশে ছেড়ে যায় ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস ট্রেনটি। পরে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।