1. info@provatferri.com : admin :
  2. provatferri.bd@gmail.com : স্টাফ রিপোর্টার : স্টাফ রিপোর্টার
মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৪৮ পূর্বাহ্ন

বাইসাইকেলকে মোটরসাইকেলে রূপ দিয়ে ভাইরাল ময়মনসিংহের রানা

উবায়দুল হক, ময়মনসিংহ
  • আপডেট : রবিবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৪

বিশ্বের অন্যতম সেরা রেসিং বাইক ডুকাটি নিয়ে ছুটছেন যুবক। দূর থেকে দেখলে এমনটি ভেবে নিতে পারেন যে কেউ। তবে আসলে এটি একটি বাইসাইকেল। আর বাইসাইকেলকে মোটরসাইকেল রূপ দিয়ে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছেন সোহেল রানা নামের এক যুবক। তিনি ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার পিঠাসূতা গ্রামের বাসিন্দা।

সাত হাজার টাকার বাইসাইকেলে আরও প্রায় ২৩ হাজার টাকা খরচ করে রূপ দিয়েছেন মোটরসাইকেলে। যা এলাকার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন এলাকা ও আশপাশ থেকে রানার বাইক দেখতে আসছেন তার বাড়িতে। অনেকে বাইকের সঙ্গে সেলফিও তুলছেন।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে রানার বাড়িতে গিয়ে রানা ও তার পরিবারের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, রানার স্বপ্ন ছিল মোটরবাইক কেনার। কিন্তু অনটনের সংসারে সে স্বপ্ন বাস্তব করা দু:সাধ্য। তবে ইচ্ছে থাকলে দুধের স্বাদ ঘোলেও যে মেটানো যায় তারই যেন উদাহারণ রানার ডুকাটি। আর এ কাজে রানের পাশে থেকে সহযোগিতা করেন এক প্রতিবেশি মাহফুজুল ইসলাম ইকবাল।

সাইকেল থেকে মোটরসাইকেলের অবয়ব তৈরি করতে প্রথমেই লাগানো হয়েছে ইলেকট্রিক বাইকের ব্যাটারি। পরে বিভিন্ন তার ও রড দিয়ে এবং বামির্জ (প্লাস্টিক জাতীয়) দিয়ে ডুকাটি বাইকের বডি তৈরা করা হয়। বিভিন্ন উপকরণে তৈরি এই মোটরসাইকেলটি দেখে মুগ্ধ এলাকাবাসী। তার এমন সৃষ্টিকর্মে খুশি সবাই।

সোহেল রানা জানান, প্রায় দেড় মাস পরিশ্রম করার পর তার নিজ বাইসাইকেলটিকে মোটরবাইকের আদলে রূপ দেয়া সম্ভব হয়েছে। এই সময়ে প্রতিদিন কাজের ফাঁকে সময় বাঁচিয়ে মোটরসাইকেল তৈরিতে সময় দেন তিনি। আর এখন এই মোটরবাইক দিয়েই বাড়ি থেকে বিভিন্ন কাজকর্মে যাচ্ছেন, বাজার করেন ঘুরতেও বের হন। মাত্র ১০ টাকার বিদ্যুৎ খরচে ৭০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিচ্ছেন। তিনি আরও জানান, আর্থিকভাবে যদি কোন সাহায্য আসে তাহলে বড় করে আরো আধুনিক ও দীর্ঘস্থায়ী প্রযুক্তি ব্যবহার করা সম্ভব।

গ্রামটির প্রয়াত স্কুল শিক্ষক দুলাল মিয়ার চার ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে তৃতীয় রানা। ভূগোল বিষয়ে আনন্দ মোহন কলেজ থেকে স্নাতক শেষ করে স্নাতকোত্তর পড়ছেন। টিউশনি করার পাশাপাশি বড় ভাইদের ফিসারী ও ব্যবসায় সহযোগিতা করেন।

ছোটবেলা থেকেই উদ্ভাবনী শক্তি প্রকট রানার। ফেলে দেওয়া নানা জিনিস থেকে বানিয়ে ফেলতেন নানা খেলনা ও উপকরণ। নিজের তৈরি করা খেলনা দিয়েই খেলতেন তিনি। তার দিয়ে রোবট, ল্যাম্বারগিনি গাড়ির আদলে গাড়ি, নৌকা, বিভিন্ন প্রতিকৃতি তৈরি করছেন অনেকদিন ধরে। যার সব কিছুই সখের বসে।

রানার মা সায়েদা খাতুন বলেন, ছোট বেলা থেকেই রানা পড়া ফাঁকি নিয়ে নানা জিনিস বানাতো। এর কারণে তার বাবা ও আমি বকাঝকা করেছি অনেক। একটা সময় পড় ও যখন পড়ালেখাতেও ভালো দেখেছি তখন আর কিছু বলিনি। আমার ছেলে সাইকেলকে বাইক বানিয়েছে, মানুষ দেখতে আসছে খুব ভালো লাগছে।

বড় ভাই হুমায়ুন কবীর বলেন, পড়ালেখা ও কাজকর্ম না করে অপ্রয়োজনীয় জিনিস বানানো নিয়ে রানা ব্যস্ত থাকায় খুব রাগ হতো। কিন্তু তার এ ধরণের চমকে এলাকার মানুষও খুশি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য রুহুল আমিন বলেন, অনেক ধরণের প্রতিভা গ্রামের লুকিয়ে থাকে। রানার প্রতিভা দেখে অন্যরাও অনুপ্রাণিত হতে পারে। সরকারি পর্যায় থেকে তাকে সহযোগিতা করলে ভালো কিছু হতে পারে।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২৩