সারাদেশের ওপর দিয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ। এই তাপপ্রবাহ আজ শুক্রবার থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত অর্থাৎ তিন দিন অব্যাহত থাকতে পারে এবং তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে। এসব তথ্য জানিয়ে আজ সারাদেশে ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিকের স্বাক্ষরিত আবহাওয়া অধিদপ্তরের এক সতর্কবার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বাড়তে পারে বলে সতর্কবার্তায় উল্লেখ করা হয়।
এদিকে আবহাওয়াবিদ তরিকুল নেওয়াজ কবির সমকালকে জানান, আজ চুয়াডাঙ্গায় ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, যা দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
চু্য়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আজ বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। টানা তিন দিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে এ জেলায়।
চু্য়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর অঞ্চলে তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠানামা করছে। দিন ও রাতের তাপমাত্রায় খুব বেশি পার্থক্য না থাকায় অতিষ্ঠ এ অঞ্চলের জনজীবন।
প্রচণ্ড তাপদাহে এ অঞ্চলের হাসপাতালে বাড়ছে গরমজনিত রোগীর সংখ্যা। অসহনীয় গরমে বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ। প্রয়োজনের তাগিদে ঘর থেকে বেরিয়েও কাজ করতে পারছে না তারা।
তীব্র তাপদাহে জনসাধারণকে সচেতন করতে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় মাইকিং করে পথচারী ও এলাকাবাসীকে সতর্ক করছে। খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হতে নিষেধ করা হচ্ছে। শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে অনুরোধ করা হচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান সমকালকে বলেন, বাতাসের আদ্রতা বেড়ে যাওয়ায় বেশি গরম অনুভূত হচ্ছে। গত মঙ্গল ও বুধবার জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড করা হয়েছিল যথাক্রমে ৪০ দশমিক ৬ ও ৪০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
গত বছরের ১৯ ও ২০ এপ্রিল মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা অতি তীব্র দাবদাহ। কাছাকাছি সময়ে বৃষ্টি না হলে গত বছরের রেকর্ড এবার ভেঙে যেতে পারে।
এদিকে অভিভাবকদের পক্ষ থেকে চলমান দাবদাহ স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার দাবি উঠেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গ্রীষ্মকালীন ছুটির আগেই গরমে ছুটির দাবি করেছেন কেউ কেউ।
দাবদাহের ব্যাপারে ইতিমধ্যে অধিদপ্তরে জানিয়েছেন জেলা শিক্ষা অফিসার আতাউর রহমান। তিনি বলেন, চুয়াডাঙ্গায় চলমান দাবদাহের বিষয়টি অধিদপ্তরকে জানানো হয়েছে। তবে এখনও কোনো নির্দেশনা আসেনি। নির্দেশনা আসলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।