জামালপুরে যৌন হয়রানির প্রতিবাদে ও আসামীদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার দুপুরে জামালপুর জেনারেল হাসপাতাল প্রাঙ্গনে এই মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ। ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধনে ইন্টার্ন চিকিৎসক ডা. জাকারিয়া জাকি, ডা. মোহনা দেব তৃষা, শিক্ষার্থী কামরুল ইসলাম সহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন।
এ সময় বক্তারা বলেন, গত ৬ এপ্রিল হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কোয়ার্টারে এক নারী ইন্টার্ন চিকিৎসক তার পোশাক পরিবর্তনের সময় পার্শ্ববর্তী নার্সদের কোয়ার্টারের ছাদ থেকে ভিডিও ধারণ করে হাসপাতালে কর্মরত নার্স রেহেনা পারভীনের ছেলে নাইমুর রহমান অংকন। পরে ধারণকৃত সেই ভিডিও আরেক নার্সের ছেলে ইমরুল হাসান আরিফ, হাসপাতালের স্টাফের ছেলে বেনজির ও তাদের বন্ধু আরাফাতের সাথে শেয়ার করে। এরপর থেকে ওই ইন্টার্ন চিকিৎসকের কাছে বিভিন্নভাবে দেড় লাখ টাকা দাবী করে অন্যথায় ভিডিওটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয় তারা।
পরবর্তীতে গত ১০ এপ্রিল জামালপুর সদর থানায় ওই ভূক্তভোগী ইন্টার্ন চিকিৎসক মামলা দায়ের করলে অভিযুক্ত চার জনকে আটক করে পুলিশ। অভিযুক্ত চার আসামিকে ওই দিনই আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ওই ইন্টার্ন চিকিৎসক বলেন, মামলার পর থেকে অভিযুক্তদের পরিবার বিভিন্নভাবে তাঁর এবং তাঁর পরিবারের ওপর চাপ দিচ্ছেন মামলা তুলে নিতে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, ‘মামলার পর থেকে অভিযুক্তদের পরিবার ও প্রভাবশালীরা বিভিন্নভাবে আমাকে চাপ দিচ্ছেন, মামলা তুলে নিতে হুমকিও দিচ্ছেন। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা পোশাক পরিবর্তনের ভিডিওটি অন্য কোথাও সংরক্ষণ করে থাকতে পারে। তাই ওই আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের দাবি করছি।’
এ ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার চারজন হলেন টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী এলাকার মো. নাইমুর রহমান ওরফে আংকন (২০), একই জেলার বিল কুকরির চর এলাকার ইমরুল হাসান ওরফে আলিফ (১৮), জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার কায়েতপাড়া এলাকার জাকারিয়া হোসেন ওরফে বেনজির (২৪) ও জামালপুর পৌর শহরের কাছারীপাড়া এলাকার আরাফাত হোসেন (২৩)। তাঁদের কাছ থেকে গোপনে ধারণ করা ভিডিও ও মুঠোফোন জব্দ করেছে পুলিশ। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আসামিদের মধ্যে আরাফাত ছাড়া বাকি সবাই হাসপাতালের নার্সদের সন্তান।
এই ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ইন্টার্ন চিকিৎসদের নিরাপত্তার দাবী জানান বক্তারা।