আগামী ৮ মে থেকে শুরু হতে যাওয়া ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের কোনো ধাপেই অংশ নেবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি।
মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে গতকাল সোমবার (১৫ এপ্রিল) রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সোমবার রাত ১০টায় শুরু করে গভীর রাতে শেষ হয় বৈঠকটি। এতে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বর্তমানে বাংলাদেশে এক বিকট স্বৈরাচারের অভ্যুদয় হয়েছে। আওয়ামী দখলদার শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতাসীন হয়ে দেড় দশক ধরে অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও সবার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বাংলাদেশ থেকে উচ্ছেদ করেছে। এদের আমলে কখনোই জাতীয় ও স্থানীয় সরকার কোনো নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি। জনগণের ভোটের তোয়াক্কা না করে ক্ষমতাসীন দলের মনোনীত প্রার্থীদেরই আজ্ঞাবাহী নির্বাচন কমিশন বিজয়ী ঘোষণা করে। প্রতিটি নির্বাচনের আগে জনগণকে প্রতারিত করার জন্য নতুন নতুন রণকৌশল গ্রহণ করে দখলদার শাসকগোষ্ঠী।
এতে আরও বলা হয়, প্রাণবন্ত গণতন্ত্রে নিরপেক্ষ নির্বাচনের সংস্কৃতি আওয়ামী লীগ কখনোই রপ্ত করেনি। তাদের অধীনে সব জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী বিরোধী দলের প্রার্থীদের বিভিন্নভাবে হামলা, মামলা ও হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। মনোনয়নপত্র তোলা ও জমা দেওয়া এবং নির্বাচনি প্রচারণায় হামলা ও শারীরিক আক্রমণসহ পথে পথে বাধা দেওয়া হয়েছে। অনেককে মনোনয়নপত্র জমা দিতেও দেওয়া হয়নি।
আওয়ামী লীগ একতরফা নির্বাচন করতে গিয়ে বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মীকে কারাগারে ভরে রাখে দাবি করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ৭ জানুয়ারির ডামি নির্বাচনে বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দসহ প্রায় ২৫ হাজারেরও বেশি নেতাকর্মীকে কারান্তরীণ করা হয়, এদের অনেকেই এখনও কারাগারে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। গুম-খুন অব্যাহত থাকে। এমতাবস্থায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল— বিএনপি শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ও তার সাজানো নির্বাচন কমিশনের অধীনে এবং প্রশাসন ও পুলিশের প্রকাশ্য একপেশে ভূমিকার জন্য ইতোপূর্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন বর্জন করেছে। এখনও সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হয়নি এবং বিদ্যমান অরাজক পরিস্থিতি আরও অবনতিশীল হওয়ায় আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার যৌক্তিক কারণ রয়েছে।
এ ব্যাপারে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, দলীয় সরকারের অধীনে বিএনপি নির্বাচনে যাবে না, আগের সিদ্ধান্তই বহাল আছে। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে কেউ নির্বাচনে অংশ নিলে আগের মতোই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।