স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘চিকিৎসকদের নানা রকম সমস্যা ও প্রতিকূলতা যে আছে, তা আমি জানি। কিন্তু মানুষকে চিকিৎসা তো দিতে হবে। জাতীয় সংসদে গেলে সংসদ সদস্যরা আমাকে বলেন, তার এলাকায় চিকিৎসক থাকে না। যেখানেই যাই, সেখানেই হাসপাতালে ডাক্তার থাকে না, শুনতে পাই। এগুলো তো ভালো কথা নয়।’
সোসাইটি অব নিউরো সার্জন্স অব বাংলাদেশের (এসএনবি) ১০তম জাতীয় নিউরোলজি কনফারেন্সে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। আজ মঙ্গলবার শাহবাগের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনভেনশন হলে এ কনফারেন্স অনুষ্ঠান হয়।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘উপজেলা হাসপাতালে যদি ডাক্তার থাকতে না চায়, তাহলে গ্রামের মানুষ কোথা থেকে ভালো চিকিৎসা পাবে? আমি বারবার বলেছি, চিকিৎসা খাতে সুনাম ফিরিয়ে আনতে হলে আমাদেরকে প্রত্যন্ত অঞ্চলে চিকিৎসাসেবা পৌঁছে দিতে হবে।’
সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘প্রত্যন্ত অঞ্চলে চিকিৎসকদের কিছু অসুবিধা আছে, আমি জানি। এসব অসুবিধা আমি নোট করছি। প্রত্যন্ত অঞ্চলে যারা চিকিৎসাসেবা দিতে যাবে, তাদের জন্য কী কী ইনসেনটিভ রাখা যায়, সেগুলো নিয়ে আমি কাজ শুরু করেছি। আমি চিকিৎসকদের সুবিধা যেমন দিব, চিকিৎসকদেরকেও রোগীদেরকে সেবা বুঝিয়ে দিতে হবে। চিকিৎসকেরা গ্রামে গিয়ে মানুষকে শুধু সেবা দিক, আমি তাদের সুযোগ-সুবিধাগুলো বাড়িয়ে দিব।’
নিউরো চিকিৎসায় বাংলাদেশ এখন বিশ্বের যেকোনো দেশের তুলনায় কোনো অংশেই কম নয় উল্লেখ করে সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘গত ১০ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিউরো হাসপাতালকে ৩০০ শয্যা থেকে বাড়িয়ে ৫০০ শয্যায় নিয়ে এসেছেন। নিউরো হাসপাতালের সক্ষমতা এখন বিশ্বের যেকোনো উন্নত দেশের সঙ্গে তুলনার যোগ্য করে তুলেছেন। দিন দিন নিউরো রোগীদের বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ে পাওয়া যাচ্ছে। ওই সব রোগীদের যাতে কষ্ট করে ঢাকায় চিকিৎসা নিতে আসতে না হয়, সে জন্য আমরা বিভাগীয় পর্যায়ে নিউরো চিকিৎসা পৌঁছে দিতে উদ্যোগী হতে কাজ শুরু করছি।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা বলেন, চিকিৎসকদের উন্নত সেবা দিতে হলে ভালো মানের চিকিৎসাবিজ্ঞানের বই পড়তে হবে। চিকিৎসাসেবার মান বৃদ্ধিতে চিকিৎসকদের আরও কাজ করতে হবে, নতুন নতুন চিকিৎসা গবেষণায় মন দিতে হবে।
সোসাইটি অব নিউরোলজিস্ট অব বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক মো. বদরুল আলম অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, স্বাচিপের সভাপতি ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী, স্বাচিপ মহাসচিব ডা. কামরুল হাসান মিলন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ বি এম খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালক অধ্যাপক টিটু মিয়াসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ বক্তব্য দেন সোসাইটি অব নিউরোলজিস্ট অব বাংলাদেশের ভাইস প্রেসিডেন্ট আবু নাসির রিজভী।