শেরপুরের জিআই পণ্য সুগন্ধি তুলশিমালা চাল বিদেশে রপ্তানীর দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মিল মালিকরা। ২৭ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার দুপুরে পৌর অডিটোরিয়াম মিলনায়তনে শেরপুর জেলা আতব চাউল ক্রাশিং ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেড ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা আতব চাউল ক্রাশিং ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি বিনয় কুমার সাহা লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, শেরপুর জেলা সুগন্ধি চালের জন্য বিখ্যাত। ইতোমধ্যে শেরপুরের সুগন্ধি তুলশীমালা চাল ভৌগোলিক নির্দেশক তালিকায় (জিআই) পণ্যের স্থান পেয়েছে। অথচ এই সুগন্ধি চাল ব্যবসায়ীরা তাদের উৎপাদিত চাল ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করতে পারছে না। ক্রেতার অভাবে গোডাউনে প্রচুর আতব চাল জমে রয়েছে। এজন্য লোকসানে চাল বিক্রি করতে হচ্ছে।
ক্রেতার অভাবে পুরাতন প্রতিমণ তুলশীমালা চাল মিলগেটে ৪ হাজার ৮শ টাকার স্থলে ৩ হাজার ২শ টাকায় এবং চিনিগুড়া চাল ৪ হাজার টাকার স্থলে ২ হাজার ২শ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। এরপরও বাজারে সুগন্ধি চালের চাহিদা নেই। পুরাতন চাল বিক্রি না হওয়ায় মিল মালিকরা নতুন ধান ক্রয় করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। এতে ব্যবসায়ীরাও ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন, অন্যদিকে কৃষকরাও ধানের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে ক্রেতার অভাবে অনেক মিল বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক ব্যবসায়ী পথে বসে গেছেন। তাদের বাঁচাতে সুগন্ধি চাউল রপ্তানীর বিকল্প নেই। যেহেতু ভাতের চাল আলাদা, তাই সুগন্ধি চাল রপ্তানী করলে দেশে খাদ্যাভাব হওয়ার কোন ঝুঁকিও নেই।
সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী বলেন, সুগন্ধি ধানের বাজার বর্তমানে সিদ্ধ ধানের বাজার মূল্যের নিচে নেমে গেছে। দেশে প্রতি বছর প্রায় ১৮ থেকে ২০ লক্ষ টন সুগন্ধি চাল উৎপাদন হয়। যা দেশের চাহিদার তুলনায় কয়েক লাখ টন বেশী। অথচ দেশের রপ্তানি ১০ হাজার মেট্রিক টনের নিচে। ২০২৩ সালে ৩০ জুন থেকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে সুগন্ধি চাল রপ্তানি বন্ধ রাখে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। কিন্তু চালের বাজারে স্থিতিশীলতা আসার পরও দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে এই রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়নি। আমরা মনে করি এ বেহাল অবস্থা থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ হচ্ছে সুগন্ধি চাল সীমিত পরিসরে বিদেশে রপ্তানি করা। সুগন্ধি চাল রপ্তানির ফলে একদিকে সরকারের কোষাগারে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আহরণ হবে। অপরদিকে ব্যবসায়ী ও কৃষক সমাজ উপকৃত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সমিতির প্রধান উপদেষ্টা পৌর মেয়র গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া লিটন, সহ-সভাপতি আব্দুল হান্নান, সদস্য আলহাজ্ব দুলাল মিয়া, সুরেশ চন্দ্র দাস, এনামুল হক বকুল প্রমুখ।