অবশেষে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের সুগন্ধা বিচ ‘বঙ্গবন্ধু বিচ’ ও কলাতলী ও সুগন্ধা বিচের মাঝখানের এলাকাকে ‘মুক্তিযোদ্ধা বিচ’ নামকরণের নির্দেশনা বাতিল করেছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এছাড়া এই প্রস্তাবের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়ের সূত্র।
সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক সাংবাদিকদের নামকরণের নির্দেশনা বাতিলের এ তথ্য জানিয়ে বলেন, বিচের নাম পরিবর্তনের নির্দেশনা বাতিল করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে এ ধরনের কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। সেইসঙ্গে এ ঘটনায় জড়িত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থার সিদ্ধান্ত চূড়ান্তও হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোন উদ্দেশ্যে কেন এ ঘটনা ঘটেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদিকে রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব মো. সাহেব উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে নামকরণের নির্দেশনা বাতিল করা হয়।
এর আগে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি তার স্বাক্ষরেই নাম পরিবর্তনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। সেইসঙ্গে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক বরাবর পাঠানো চিঠিতে দুই সৈকতের নাম পরিবর্তনের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়।
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মো. সোলায়মান মিয়ার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একাদশ জাতীয় সংসদের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ১৩তম সভায় বিচ দুটির নামকরণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে চিঠিতে জানানো হয়েছিল।
এরপর সুগন্ধা বিচকে বঙ্গবন্ধু বিচ নামকরণের নির্দেশনার বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে। বঙ্গবন্ধুর সম্মানে ক্ষুদ্র এ পয়েন্টের নামকরণ নিয়ে দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
নতুন বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, পূর্বে পাঠানো (১৯ ফেব্রুয়ারি) নির্দেশনার ওপর কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ না করার জন্য নির্দেশনাক্রমে অনুরোধ করা হলো। একইসঙ্গে পূর্বে পাঠানো পত্রটি বাতিল করা হলো।
এ নিয়ে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান সাংবাদিকদের বলেন, বঙ্গবন্ধু বিচ নামকরণের নির্দেশনা বাতিল করা হয়েছে, আর মন্ত্রণালয় চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে জানানো হয়েছিল, সংসদীয় কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে সুগন্ধা বিচের নাম বঙ্গবন্ধু বিচ করার সিদ্ধান্ত দিয়েছিল। ওই চিঠির আলোকে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছিলাম। পরে মন্ত্রণালয়ের আরেক চিঠিতে সেটি বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়।
এর আগে সুগন্ধা পয়েন্টকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম অনুসারে বঙ্গবন্ধু বিচ এবং সুগন্ধা পয়েন্ট থেকে কলাতলীর মাঝামাঝি সৈকতকে বীর মুক্তিযোদ্ধা বিচ নামে নামকরণ করার প্রস্তাব করে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়। ১৯ ফেব্রুয়ারি পাঠানো ওই চিঠিতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন অধিশাখার সহকারী সচিব মো. সাহেব উদ্দিনের সই করেছেন।
তিনি জানান, একজনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সৈকতের দুটি পয়েন্টের নাম পরিবর্তনের প্রাথমিক সিদ্ধান্তের চিঠি জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো হয়েছে। জেলা প্রশাসক সংশ্লিষ্ট কমিটির সঙ্গে বসে সম্ভাব্যতা যাচাই শেষে একটি প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠাবেন। তাঁর প্রতিবেদন যদি আবেদনের পক্ষে হয়, তাহলে সৈকতের দুটি পয়েন্টের নাম পরিবর্তন হয়ে ‘বঙ্গবন্ধু বিচ’ ও ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা বিচ’ হবে।