পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ২২৯ জন বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। আরও আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
আজ মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে মিয়ানমারের গোলাবারুদ আসার ঘটনা দুঃখজনক। এজন্য মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত ও দেশটির উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বলেছেন যে, তারা বিজিপি সদস্যদের ফিরিয়ে নেবে। নৌ পথে তাদের ফেরানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারত সফরে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও বাণিজ্য মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত হবে। সেখানে মিয়ানমার পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত কথা হবে।
মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সংঘাতের জেরে আজ দেশটি থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন আরও ১১৪ জন। তাঁদের মধ্যে মিয়ানমারের সেনাসদস্য, সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি)–এর সদস্য ও সরকারি কর্মকর্তারা আছেন।
এ নিয়ে গত রোববার থেকে দেশটির মোট ২২৯ জন পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন, যাঁদের বেশির ভাগ বিজিপির সদস্য।
আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের রহমতবিল সীমান্ত দিয়ে নতুন করে মিয়ানমার থেকে বিজিপি, সেনা ও সরকারি কর্মকর্তাদের পালিয়ে আসার ঘটনা ঘটে। তাঁদের রহমতবিল বিজিবি ফাঁড়িতে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) সূত্র জানিয়েছে, যে ১১৪ জন আজ বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যই নন, দেশটির সেনাসদস্য, শুল্ক কর্মকর্তা ও অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তাও রয়েছেন। বিজিবি হেফাজতে তাঁদের সবার পরিচয় নেওয়ার কার্যক্রম চলছিল।
এদিকে পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সংঘাত অনেক তীব্রতর হয়ে উঠেছে। বিস্ফোরণের শব্দে কাঁপছে সীমান্ত এলাকা।
এ পরিস্থিতিতে আজ সকালে রহমতবিল সীমান্ত দিয়ে একে একে অনেক বিজিপির সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে আসেন। বাংলাদেশের বিজিবির সদস্যরা পালিয়ে আসাদের অস্ত্র ও গোলাবারুদ জমা নিয়ে ফাঁড়িতে রেখেছেন।
গফুর উদ্দিন আরও জানান, আজ ভোরে একই সীমান্ত দিয়ে ৮ রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছেন। এসব রোহিঙ্গাও বিজিবির হেফাজতে।
এদিকে সূত্র জানিয়েছে, রোববার থেকে আশ্রয় নেওয়া বিজিপির সদস্যদের মধ্যে অনেকেই আহত।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালে এখন পর্যন্ত ৯ জনকে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে চারজনকে গতকাল সোমবার রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানান কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) মো. আশিকুর রহমান।