২০২৩ সালে এখন পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে গরম বছর ছিল। তবে জলবায়ুর প্যাটার্ন এল নিনো আবারও ফিরে আসায় ২০২৪ সাল বিগত বছরের চেয়েও আরও বেশি গরম হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
বিভিন্ন আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের পূর্বাভাসের বরাত দিয়ে করা এক গবেষণায় এ তথ্য জানানো হয়েছে নেচার জার্নালে প্রকাশিত এক নিবন্ধে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, মানবজাতি এখনো বিপুল পরিমাণে গ্রিনহাউস গ্যাস বায়ুমণ্ডলে ছাড়াতে থাকায় ২০২৩ সালের চেয়েও ২০২৪ সাল আরও বেশি গরম হতে যাচ্ছে। এ বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোপারনিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিসের ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর মিডিয়াম রেঞ্জ ওয়েদার ফোরকাস্ট শীর্ষক প্রতিবেদনে আবহাওয়াবিদ সামান্থা বার্জেস বলেছেন, ‘আমরা জানি যে, ২০২৪ সালে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাবে। তবে এই তাপপ্রবাহ কোথায় ও কখন বয়ে যাবে তা নিয়ে পূর্বাভাস দিতে পারছি না।
নেচার জার্নালে প্রকাশিত ওই নিবন্ধে বলা হয়েছে, চলতি মাসে বিভিন্ন আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের প্রতিবেদন বলছে, ২০২৩ সালের গড় তাপমাত্র প্রাক শিল্পযুগ তথা ১৮৫০-১৯০০ সালের সময়ের চেয়ে বিভিন্ন স্থানে গড়ে ১ দশমিক ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১ দশমিক ৫৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল।
ওয়াশিংটন ডিসির ইউএস ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের প্রধান বিজ্ঞানী সারাহ ক্যাপনিক বলেছেন, ‘আমরা যা জানতে পেরেছি তা এক কথায় বিস্ময়কর।’
কোপারনিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিসের মতে, গত বছর প্রতিদিন প্রাক শিল্পযুগের তুলনায় গড়ে কমপক্ষে ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি উষ্ণ ছিল। বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন, ২০২৪ সালের দৈনিক গড় তাপমাত্র প্রাক শিল্পযুগের তুলনায় ১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হয়ে যেতে পারে।
যুক্তরাজ্যের এক্সেটারে অবস্থিত দেশটির আবহাওয়া বিভাগ পূর্বাভাস দিয়েছে, ২০২৪ সালে বিশ্বের গড় তাপমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করার আশঙ্কা আছে।
ব্রিটিশ আবহাওয়াবিদেরা ২০২৩ সালে এক বিশ্লেষণ থেকে বলেছেন, ২০২৩ সালেই পৃথিবী পৃষ্ঠের গড় তাপমাত্র প্রাক শিল্পযুগের চেয়ে ১ দশমিক ৪৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল।
এই অবস্থায় চলতি বছর যদি তাপমাত্রা প্রাক শিল্পযুগের চেয়ে ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি হয় তাহলে স্বাভাবিকভাবে চলতি বছর হবে গত বছরের চেয়েও গরম।
এ বিষয়ে ব্রিটিশ আবহাওয়াবিদ নিক ডানস্টোন বলেন, ‘এই প্রথম আমরা এমন পূর্বাভাস দিচ্ছি।’ এ সময় তিনি সতর্ক করে বলেন, আমাদের মনে হয়- আমরা এরই মধ্যে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি লঙ্ঘন করে ফেলেছি।