দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেরপুরের ৩টি আসনের প্রতিদ্বন্দ্বী ১৬ প্রার্থীর মধ্যে ১১ জনেরই জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। তারা স্ব-স্ব নির্বাচনী এলাকায় প্রদত্ত ভোটের ৮ ভাগের একভাগেরও কম পাওয়ায় তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। আসনভিত্তিক ফলাফল পর্যালোচনায় ওই তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
স্ব-স্ব আসনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের তৈরি বেসরকারি ফলাফল শিটের তথ্য অনুযায়ী, শেরপুর-১ (সদর) আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ২৩ হাজার ৬৬৪ জন। এর মধ্যে ভোট প্রদান করেছেন ২ লাখ ৩৪ হাজার ৬৪১ জন। আর বিজয়ী ট্রাক প্রতীকের প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ছানুয়ার হোসেন ছানু পেয়েছেন ১ লাখ ৩৬ হাজার ৯৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা প্রতীকের প্রার্থী, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আতিউর রহমান আতিক পেয়েছেন ৯৩ হাজার ৩৭ ভোট। প্রতিদ্বন্দ্বী অন্যদের মধ্যে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মাহমুদুল হক মনি লাঙল প্রতীকে ২ হাজার ২০৭ ভোট, কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের প্রার্থী বারেক বৈদেশী গামছা প্রতীকে ২০৫ ভোট, তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী ফারুক হোসেন সোনালী আঁশ প্রতীকে ১৯২ ভোট, বিএনএম প্রার্থী এ্যাডভোকেট মো. আব্দুল্লাহ নোঙর প্রতীকে ১৭২ ভোট ও বিএসপি প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ একতারা প্রতীকে ৭৪ ভোট পেয়েছেন। অর্থাৎ এ আসনে বিজয়ী ও নিকটতম প্রার্থী ব্যতীত অপর ৪ জন প্রার্থীই প্রদত্ত ভোটের ৮ ভাগের একভাগেরও কম পাওয়ায় তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে।
শেরপুর-২ (নকলা-নালিতাবাড়ী) আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ১১ হাজার ৬৯৫ জন। এর মধ্যে ভোট প্রদান করেছেন ২ লাখ ৩৩ হাজার ২২৬ জন। আর আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী, দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য, সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী একাই পেয়েছেন ২ লাখ ২০ হাজার ১৪২ ভোট। প্রতিদ্বন্দ্বী অপর ২ জনের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ মোহাম্মদ সাঈদ ঈগল প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৫ হাজার ৪৪২ ভোট। আর জাসদ প্রার্থী লাল মোহাম্মদ শাজাহান মশাল প্রতীকে পেয়েছেন ৪ হাজার ৫৭৬ ভোট। এতে তাদেরও জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে।
এছাড়া শেরপুর-৩ (শ্রীবরদী-ঝিনাইগাতী) আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৮২ হাজার ৪০০ জন। এর মধ্যে প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা ১ লাখ ৫৪ হাজার ৩৭৩। আর আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এডিএম শহীদুল ইসলাম পেয়েছেন ১ লাখ ২ হাজার ৪৪৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী এসএম আব্দুল্লাহেল ওয়ারেজ নাইম ট্রাক প্রতীকে পেয়েছেন ৪৪ হাজার ৭২৮ ভোট। অপর প্রতিদ্বন্দ্বী ৪ প্রার্থীর মধ্যে জাতীয় পার্টির স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রকৌশলী ইকবাল আহসান ঈগল প্রতীকে ২ হাজার ৫৮০ ভোট, আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী মিজানুর রহমান রাজা কেটলি প্রতীকে ৬৯৮ ভোট, জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী মো. সিরাজুল হক লাঙল প্রতীকে ৪৩৯ ভোট ও কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের প্রার্র্থী মো. সুন্দর আলী গামছা প্রতীকে ১৭১ ভোট পেয়েছেন। তাদের মধ্যে বিজয়ী ও নিকটতম প্রার্থী ব্যতীত অপর ৪ জনেরই জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে।
এ ব্যাপারে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ আনোয়ারুল হক মঙ্গলবার দুপুরে জানান, গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ (আরপিও) ১৯৭২ এর ৪১ এর ১ ধারা মোতাবেক নির্বাচনে প্রদত্ত সর্বমোট ভোটের ৮ ভাগের একভাগের কম ভোট যারা পেয়েছেন তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।