বাংলাদেশের পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে জাতিসংঘ। বাংলাদেশে যা ঘটছে, তার প্রতি নজর রাখছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
গতকাল সোমবার জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্রের কার্যালয়ের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন সংস্থাপ্রধানের সহযোগী মুখপাত্র ফ্লোরেন্সিয়া সোতো নিনো।
ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক তাঁর করা প্রশ্নে বলেন, বাংলাদেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে জয় পাওয়ার দাবি করেছেন শেখ হাসিনা। যদিও এমন এক পরিবেশে নির্বাচন হয়েছে, যেখানে হাজার হাজার মানুষ ও বিরোধী নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে বলে কি মনে করে জাতিসংঘ?
জবাবে সহযোগী মুখপাত্র ফ্লোরেন্সিয়া সোতো নিনো বলেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতির দিকে তাঁরা নজর রাখছেন। সেখানে যা ঘটছে, তার দিকে জাতিসংঘ মহাসচিবও নজর রাখছেন। বিরোধীদের নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্তের বিষয়টি তিনি জানেন। ভিন্নমত-সমালোচনা দমনসহ বিরোধী নেতাদের গ্রেপ্তারের সব অভিযোগের বিষয়ে তিনি অবগত।
সহযোগী মুখপাত্র আরও বলেন, নির্বাচনের আগে ও নির্বাচনের সময় সহিংসতার ঘটনার খবরে জাতিসংঘ মহাসচিব স্পষ্টতই উদ্বিগ্ন। তিনি সব পক্ষকে সব ধরনের সহিংসতা পরিহার করতে বলেছেন। মানবাধিকার ও আইনের শাসনের প্রতি যাতে পূর্ণ শ্রদ্ধা দেখানো হয়, তা নিশ্চিতে সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। সেখানে গণতন্ত্র সুসংহত ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য এটি অপরিহার্য।
বাংলাদেশ নিয়ে ব্রিফিংয়ে আরেক প্রশ্নে বলা হয়, নির্বাচনে ২৮টি রাজনৈতিক দল অংশ নেয়। সেখানে দুই শতাধিক বিদেশি পর্যবেক্ষক ছিলেন। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের পর্যবেক্ষকও ছিলেন। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকেরা নিবিড়ভাবে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছেন। তাঁরা নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও অন্তর্ভুক্তি নিয়ে পুরোপুরি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। বাংলাদেশের নতুন সরকার ভবিষ্যতে জাতিসংঘের সঙ্গে তার সহযোগিতার সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিতে চায়। বাংলাদেশের নতুন সরকার নিয়ে সহযোগী মুখপাত্রের কিছু বলার আছে কি?
জবাবে সহযোগী মুখপাত্র ফ্লোরেন্সিয়া সোতো নিনো বলেন, তাঁরা সত্যিকার অর্থে যা বলতে চাইছেন, তা হলো সরকার যা করছে, তা চলবে না। সেখানে তাদের গণতন্ত্রের পরিবেশ গড়ে তোলাটা অপরিহার্য। সব ধরনের সহিংসতা পরিহার করতে হবে। মানবাধিকারের প্রতি যাতে শ্রদ্ধা দেখানো হয়, তা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।
৭ জানুয়ারি বাংলাদেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের বেসরকারি ফলাফল অনুযায়ী, নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। বিএনপিসহ বিভিন্ন দল এই নির্বাচন বর্জন করেছে।