আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি-জামায়াত এবারও ব্যর্থ হয়েছে। তাদের সব ষড়যন্ত্রের জবাব ব্যালটের মাধ্যমে মানুষ দিয়ে দিয়েছে। বারবার নির্বাচন বর্জন করে বিএনপির জন্য এখন আগামী পাঁচ বছর অপেক্ষা করা ছাড়া আর কিছু করণীয় নেই।
আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
বিএনপির সব অভিযোগ বাস্তবতাবিবর্জিত, ভিত্তিহীন ও মনগড়া বলে মন্তব্যে করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, আজ সকালেও বিএনপির নেতা আবদুল মঈন খান মিথ্যার ঢালি নিয়ে সাংবাদিকদের সামনে উপস্থিত হয়েছিলেন। এমন মিথ্যাচারই বিএনপির এই করুণ পরিণতির জন্য দায়ী। জনগণ এসব নব্য-গোয়েবলসদের মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে ব্যালটের মাধ্যমে জবাব দিয়ে দিয়েছে। বিএনপি নিজেই বারবার ভুল রাজনীতি অনুসরণ করায় একটি অকার্যকর ও ব্যর্থ রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, মানুষ বিএনপি-জামায়াতকে দেখিয়ে দিয়েছে যে অপরাজনীতি করে এই দেশে জনগণের রায় পাওয়া সম্ভব নয়। আগুন-সন্ত্রাস ও গণতন্ত্র একসঙ্গে চলতে পারে না, এবারের নির্বাচনে ভোটারদের অংশগ্রহণ তা প্রমাণ করেছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা বিএনপিকে বলব, সত্য মেনে নিয়ে রাজনীতি করুন। গণতন্ত্রের মৌলিক নীতি অনুসরণ করুন। সংবিধানবিবর্জিত রাজনীতি পরিহার করুন। নতুবা ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে আপনাদের নিক্ষিপ্ত হতে হবে।’
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভের পর বিভিন্ন দেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানাচ্ছে বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, আজ সকালে ভারত, রাশিয়া, চীন, ভুটান, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কাসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতেরা শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। রাষ্ট্রদূতেরা নিজ নিজ দেশের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সংস্থা, গণমাধ্যম, বিদেশি সাংবাদিক, পর্যবেক্ষক—সবাই নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছে। তারা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। এ নির্বাচন দেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় এক মাইলফলক হয়ে থাকবে, বাংলাদেশকে বিশ্বদরবারে আরও শক্তিশালী করবে।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে ১০ জানুয়ারি রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করবে আওয়ামী লীগ। সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানিয়ে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, জনসভায় সভাপতিত্ব করবেন দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা।
নতুন সরকারের বিরোধী দল কে হবে—এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদেরের কাছে প্রশ্ন করা হয়। জবাবে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে নতুন প্রধানমন্ত্রী পরিস্থিতি, বাস্তবতা বুঝে সিদ্ধান্ত নেবেন।
নির্বাচনে অনেক স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। তাঁদের ব্যাপারে আওয়ামী লীগের অবস্থান কি হবে—এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, স্বতন্ত্ররা জনগণের প্রতিনিধি। নির্বাচিত সংসদ সদস্য হিসেবে তাঁরা সংসদে বসবেন। জনগণের জন্য ভূমিকা পালন করবেন।
আরেক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি কী বলেছে, তার ওপর তো দেশ চলে না। বিএনপি যা বলেছে, সে অনুযায়ী আন্দোলন করে তারা সরকার হটাতে পারেনি। এই নির্বাচন হতে দেওয়া যাবে না, এ কথাও বিএনপি বলেছে। নির্বাচন শুধু হতে দেওয়া নয়, নির্বাচন হতে দেবে না, প্রতিহত করবে—সবই তো বলেছে তারা। কিন্তু তারা কোনটা করতে পেরেছে?
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়াসহ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী কয়েকজন প্রার্থী উপস্থিত ছিলেন।