দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী) আসনে ঈগল প্রতীক পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান। আজ সোমবার দুপুরে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শফিউর রহমান প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেন। মুরাদ হাসানের পক্ষে তাঁর একজন প্রতিনিধি প্রতীক গ্রহণ করেন।
স্থানীয়রা জানায়, ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী) আসনে সাতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীকে প্রথমবারের মতো লড়বেন মো. মাহবুবুর রহমান। এছাড়া আওয়ামী লীগের দু’জন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে বর্তমান এমপি ডা. মুরাদ হাসান এবার ঈগল প্রতীকে এবং তেজগাঁ কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মো. আব্দুর রশীদ ট্রাক প্রতীকে লড়বেন। এছাড়া এ আসনে লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির মো. আবুল কালাম আজাদ, তৃণমূল বিএনপির সোনালী আঁশ প্রতীকে মো. সাইফুল ইসলাম, জাসদের মশাল প্রতীকে মো. গোলাম মোস্তফা জিন্নাহ ও বিএনএফ এর টেলিভিশন প্রতীকে লড়বেন তারিখ মাহাদী।
তফসিল ঘোষণার আগ পর্যন্ত ডা. মুরাদ হাসান, অধ্যক্ষ আব্দুর রশীদ ও মো. মাহবুবুর রহমান আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার জন্য ঢাকায় ব্যাপক লবিং এবং এলাকায় ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে সমর্থন আদায় করেন।
কিন্তু বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য ডা. মুরাদ হাসান কেন্দ্রীয় এবং জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে দলীয় ভাবে কোণঠাসা হয়ে পড়লে দলীয় মনোনয়ন পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভোগেন। সাবেক অধ্যক্ষ মো. আব্দুর রশীদও এলাকায় প্রচার প্রচারণার ঝড় তুলেছিলেন। দলে একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী মাঠে থাকায় দলীয় কোন্দল চরম আকার ধারণ করে। কিন্তু আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ড এ আসনের দলীয় প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেয় এ আসনের সাবেক এমপি ও প্রবীণ প্রয়াত আওয়ামী লীগনেতা আব্দুল মালেকের ছেলে ইঞ্জিনিয়ার মো. মাবুবুর রহমানকে।
মো. মাহবুবুর রহমানকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ঘোষণা করা হলেও ডা. মুরাদ হাসান ও মো. আব্দুর রশীদ নির্বাচনের মাঠ ছাড়েননি। তারা দু’জন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে লড়ার ঘোষণা দেন। দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নিয়ে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের মনোভাবে শিথিলতার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তারা দু’জন শেষ পর্যন্ত ভোটের মাঠে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়ে গেলেন। ডা. মুরাদ হাসানকে জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করলেও তিনি মাঠ ছাড়েননি।
ডা. মুরাদ হাসান এবারের নির্বাচনে ভোটের লড়াইয়ে থেকে যাওয়ায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর সাথে দুই স্বতন্ত্র প্রার্থীর ত্রিমুখী তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্টরা।
ফলে আওয়ামী লীগের দুই স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ তিনজন প্রার্থী ভোটের মাঠে থেকে যাওয়ায় উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তিনটি ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে।
উল্লেখ্য ডা. মুরাদ হাসান ২০০৮ সালের নবম এবং ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সরিষাবাড়ী আসন থেকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালে তিনে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়ও ২০১৯ সালে তথ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।