বাবার হাতের আঙুল ধরে বাড়ির সামনের রাস্তায় হাঁটছিল তিন বছর বয়সী শিশু তালহা। হঠাৎ দ্রুতগতিতে ছুটে আসা যাত্রীবাহী একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা শিশুটিকে ধাক্কা দেয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পথেই মারা যায় শিশুটি। একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে মা-বাবা শুধু বিলাপ করে যাচ্ছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল রোববার বিকেলে মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলা সদরের উত্তর জাঙ্গিরাই এলাকায়। নিহত তালহা ওই এলাকার বাসিন্দা মোস্তাকিন হোসেন ও ফাতেমা বেগম দম্পতির ছেলে। মোস্তাকিন স্থানীয় একটি কিন্ডারগার্টেনে শিক্ষকতা করেন।
স্বজনেরা জানান, গতকাল বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে মোস্তাকিন ছেলে তালহাকে নিয়ে রাস্তার পাশ দিয়ে হাঁটছিলেন। এ সময় যাত্রীবাহী একটি অটোরিকশা তালহাকে ধাক্কা দেয়। এতে সে রিকশার পেছনের চাকার নিচে পড়ে যায়। পরে সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায় তালহা। আজ সোমবার সকাল ১০টার দিকে উত্তর জাঙ্গিরাই মসজিদে জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
বেলা ১১টার দিকে তালহাদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, আত্মীয়স্বজনসহ আশপাশের নারী-পুরুষেরা সেখানে ভিড় জমিয়েছেন। বাড়ির একটি কক্ষে বিছানায় বসে তালহার মা-বাবা বিলাপ করছিলেন। সবাই তাঁদের সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন।
তালহার বাবা মোস্তাকিন হোসেন হাউমাউ করে কেঁদে বলেন, ‘স্কুল থেকে ফেরার পর ছেলেটা বেড়ানোর বায়না ধরে। রাস্তার পাশ দিয়া হাঁটছিলাম। আমার আঙুলে ধরে ছিল। হঠাৎ অটোরিকশা এসে ছেলেটাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিল। সব শেষ হয়ে গেল। রিকশা ছেলেটাকে কেড়ে নিল।’
জুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন বলেন, দুর্ঘটনাটির কথা তাঁরা শুনেছেন, তবে নিহত শিশুর পরিবার এ বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি। দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।