1. info@provatferri.com : admin :
  2. provatferri.bd@gmail.com : স্টাফ রিপোর্টার : স্টাফ রিপোর্টার
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৩১ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ

মোবাইল হাতে না থাকলে অস্থির লাগে? জেনে নিন কারণ

রিপোর্টার
  • আপডেট : রবিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৩

বর্তমানে মোবাইল ফোন আমাদের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে গিয়েছে। এটি এমন একটি যন্ত্র যার সঠিক ব্যবহার যেমন আমাদের জীবনকে সহজতর করতে পারে, তেমনি এর অপব্যবহারও হতে পারে মূল্যবান সময় নষ্টের মূল কারণ। আমরা চাইলেই আমাদের জীবন থেকে মোবাইল ফোনকে আলাদা করতে পারবো না। অনেকের ফোনটি হাতছাড়া হলেই এখন ঘূর্ণিঝড়ের গতিতে উদ্বেগে আক্রান্ত হতে দেখা যায়।

বিশ্বজুড়ে বর্তমানে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৭ শ কোটিরও বেশি। বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় একানব্বই শতাংশ মানুষের হাতে রয়েছে মোবাইল ফোন। আমাদের অনেক সেবা গ্রহণের জন্য মোবাইল ফোনের ওপর নির্ভর করতে হয়। মোবাইল ফোনে ইন্টারনেটের সংযুক্তি ছিল যুগান্তকারী ঘটনাগুলোর একটি।

বর্তমানে বিদ্যুৎ বিল প্রদানের ক্ষেত্রে মোবাইল ফোন বহুল ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে এই মোবাইল ফোন হারিয়ে গেলে বা যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে স্বাভাবিকভাবেই আপনার মধ্যে অস্বস্তি বা শঙ্কা দেখা দেবে।

‘নোমোফোবিয়া’ (Nomophobia) হচ্ছে ‘নো মোবাইল ফোন ফোবিয়া’ (No Mobile Phone Phobia) শব্দগুলোর সংক্ষিপ্ত রূপ। সাধারণত কোনো জিনিসের উপস্থিতি বা অনুপস্থিতি কিংবা কোনো পরিস্থিতি উদ্ভবের ফলে যখন মানসিক অস্বস্তির তৈরি হয়, তখনই সেটিকে ‘ফোবিয়া’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়৷

সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নোমোফোবিয়ায় আক্রান্ত তারা তাদের ফোনটি ছাড়া নিঃসঙ্গ বোধ করেন। ফোনের সঙ্গে এক অস্বাস্থ্যকর সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তারা। আর এর ফলে তারা বাস্তব মানুষের সঙ্গ থেকে বঞ্চিত হন। মোবাইল ফোনের হারিয়ে যাওয়ার ফলে, নেটওয়ার্ক থেকে বিচ্ছিন্ন হবার ফলে কিংবা মোবাইল ফোনের চার্জ ফুরিয়ে যাওয়ার ফলে আপনার মধ্যে বিশেষ কিছু লক্ষণ দেখা যেতে পারে। এসব লক্ষণের পরিপ্রেক্ষিতে আপনাকে ‘নোমোফোবিয়া’য় আক্রান্ত ব্যক্তি হিসেবে ঘোষণা দেয়া যেতে পারে।

রোগটির দুই ধরনের লক্ষণ রয়েছে– মানসিক এবং শারীরিক। মানসিক কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে মোবাইল ফোন থেকে দূরে সরে গেলে হঠাৎ মনে ভয়, দুশ্চিন্তা কিংবা হতাশা ভর করা। হঠাৎ মোবাইল ফোন চোখের আড়ালে চলে গেলে আতঙ্কিত হয়ে যাওয়া। দীর্ঘ সময় মোবাইল ফোন চালাতে না পারলে মানসিক চাপ অনুভব করা। সাধারণত কোনো ভীতিকর পরিস্থিতিতে মানুষ যেসব শারীরিক লক্ষণ প্রকাশ করে থাকে, এই রোগের ক্ষেত্রেও সেগুলোই প্রকাশ পায়। যেমন- হঠাৎ কাঁপতে শুরু করা কিংবা স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস বাঁধাগ্রস্ত হওয়া। এছাড়াও জ্ঞান হারিয়ে ফেলা অথবা কোনো আবহাওয়াগত কারণ ব্যতিরেকে ঘামতে থাকাও এই রোগের শারীরিক লক্ষণগুলোর মধ্যে অন্যতম। মূলত, একজন আক্রান্ত মানুষের শারীরিক লক্ষণগুলো নোমোফোবিয়ার মানসিক পরিস্থিতির জন্য উদ্ভূত হয়ে থাকে।

ঠিক কী কারণে নোমোফোবিয়া তৈরি হয়, তা নিয়ে রয়েছে নানা বিতর্ক। তবে মোবাইল ফোনের উপর অতিরিক্ত নির্ভরশীলতার ক্ষেত্রে সবাই একমত হয়েছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, মোবাইল ফোনের উপর অত্যধিক নির্ভরশীলতার ফলে একধরনের আসক্তি তৈরি হয় মানুষের মধ্যে।

নোমোফোবিয়া এখনও কোনো স্বীকৃত মানসিক রোগ না হলেও প্রযুক্তির অতি ব্যবহারের ফলে যে মানসিক অসুস্থতা তৈরি হচ্ছে– একে অস্বীকার করার কিছু নেই। তরুণদের মাঝে এই রোগের লক্ষণগুলো সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে। চাইলে কিছু কৌশল অবলম্বন করে নিজের চেষ্টায়ও নোমোফোবিয়া থেকে দূরে থাকা যায়। গভীর রাত পর্যন্ত মোবাইল ফোনে সময় না দেয়া, অল্প সময়ের জন্য বাসায় মোবাইল ফোন রেখে দিয়ে বাইরে অবস্থান করা, কিংবা দিনের একটি সময়ে সবধরনের প্রযুক্তি থেকে দূরে থাকার মতো কাজগুলো নোমোফোবিয়া থেকে দূরে রাখতে পারে একজন মানুষকে।

প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা হয়েছে এটি যেন মানুষের জীবনকে আরও সহজতর করে তুলতে পারে, জীবন যেন হয়ে ওঠে আরও বেশি উপভোগ্য ও স্বাচ্ছন্দ্যময়। কিন্তু প্রযুক্তির অপব্যবহারে যখন জীবনে জটিলতা তৈরি হয়, তখন সেটির প্রভাব হয়ে ওঠে ভয়াবহ। এরকম পরিস্থিতির যেন উদ্ভব না ঘটে, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

পুরো বিশ্বে বর্তমানে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা সাতশ কোটিরও বেশি। বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় একানব্বই শতাংশ মানুষের মোবাইল ফোন রয়েছে। আমেরিকায় মোট মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর প্রায় ৬৬ শতাংশ ব্যক্তিই তাদের মধ্যে নোমোফোবিয়ার লক্ষণগুলো বিদ্যমান থাকার কথা স্বীকার করেছেন।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২৩