পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশের খাদে পড়ে ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী আবু সাঈদ (৩৩) নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় তেঁতুলিয়ার ইউএনও ফজলে রাব্বি (৩৩), উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আল আমিন (৩১) ও সহকারী প্রোগ্রামার নবিউল করিম সরকার (৩০) গুরুতর আহত হয়েছেন।
গতকাল শনিবার দিবাগত রাত একটার দিকে পঞ্চগড় সদর উপজেলার সাতমেরা ইউনিয়নের চাওয়াই সেতুসংলগ্ন চেকরমারী এলাকায় পঞ্চগড়-বাংলাবান্ধা মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত আবু সাঈদ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) পীরগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী। এর আগে তিনি তেঁতুলিয়ায় কর্মরত ছিলেন। তিনি গতকাল তেঁতুলিয়ায় বেড়াতে এসেছিলেন বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।
আহত তিনজনকে উদ্ধার করে প্রথমে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাঁদের মধ্যে সমাজসেবা কর্মকর্তা আল আমিনের অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মধ্যরাতে ইউএনওর সঙ্গে তাঁর গাড়িতে ওই কর্মকর্তারা পঞ্চগড় শহরের দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় পঞ্চগড়-বাংলাবান্ধা মহাসড়কের চাওয়াই সেতু থেকে কিছুটা উত্তর-পশ্চিমে চেকরমারী বাঁকে গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এরপর সড়কের পাশের খাদে পড়ে যায়। এতে গাড়ির বাঁ পাশের দরজাটি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং বিভিন্ন অংশ দুমড়ে–মুচড়ে যায়। এ সময় প্রকৌশলী আবু সাঈদ গাড়ি থেকে ছিটকে পাশের ঝোঁপে পড়ে ঘটনাস্থলে মারা যান। অপর তিনজন গাড়িতেই আহত অবস্থায় ছিলেন। পরে স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
তেঁতুলিয়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাকির হোসেন মোল্লা বলেন, অতিরিক্ত গতির কারণে গাড়িটি বাঁকের মধ্যে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে তাঁরা ধারণা করছেন। গাড়িটি তেঁতুলিয়া থেকে পঞ্চগড়ের দিকে যাচ্ছিল। নিহত ব্যক্তির লাশের ময়নাতদন্তের প্রস্তুতি চলছে।
পঞ্চগড় ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা তুষার কান্তি রায় বলেন, ‘আমরা রাত ১টা ১০ মিনিটের দিকে দুর্ঘটনার খবর পাই। পরে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে আহত তিনজকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসি। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে।’
অসুস্থ থাকায় এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। ঘটনার পর আহত কর্মকর্তাদের দেখতে যান জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার এসএম সিরাজুল হুদা।