বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদের ময়মনসিংহ-৪ প্রার্থী দিয়েছে জাতীয় পার্টি (জাপা)। এর মাধ্যমে দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশনের আগামী নির্বাচনে জাপার প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই শেষ হয়ে গেল।
সূত্র জানিয়েছে, রওশন এরশাদকে দলীয় মনোনয়ন ফরম দিতে বুধবার রাত ৯টা পর্যন্ত অপেক্ষা করে জাপা। ফরম না নেওয়ায় রাত সাড়ে ৯টার দিকে ময়মনসিংহ-৪ আসনে প্রার্থী দেওয়া হয়।
জাপার দপ্তর সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক বলেছেন, ময়মনসিংহ-৪ আসনে লাঙলের প্রার্থী হবেন আবু মুসা সরকার। তাকে রাত সাড়ে ৯টার দিকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের স্বাক্ষরিত মনোনয়নের চিঠি দেওয়া হয়েছে।
রওশনের ময়মনসিংহ-৪ ফাঁকা রেখে গত সোমবার ২৮৭ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে জাপা। রংপুর-৩ আসনে প্রার্থী হবেন জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদের। ওই আসনের এমপি রওশনপুত্র রাহগির আল মাগি এরশাদ সাদ। দলীয় নেতৃত্ব নিয়ে আগে থেকেই বিরোধ চলা জি এম কাদেরের নেতৃত্বে নির্বাচনে অংশ নিতে রাজি নন রওশন। সাদ এরশাদকে রংপুর-৩ আসন থেকে বাদ দেওয়ায় টানাপোড়ন প্রকাশ্য বিরোধে রূপ নেয়। রওশন এবং তার ছেলে দলীয় মনোনয়ন ফরম নেননি।
গত শনিবার ‘সরকারি মধ্যস্থতায়’ রওশনের বাসায় গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করেন জি এম কাদের। তবে জাপার দুর্গখ্যাত রংপুর-৩ আসন নিয়ে বিরোধের কারণে বিভেদ মেটেনি। রওশন হুঁশিয়ারি দেন, তার অনুসারীদের মনোনয়ন না দিলে নির্বাচনে অংশ নেবেন না। জি এম কাদেরও রংপুর-৩ আসনে প্রার্থী হতে অনড় অবস্থান নেন। রওশনের পছন্দের আসনে ও সাদকে রংপুর-৩ বাদে অন্য যেকোনো আসনে প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব দিলেও তাদের অনুসারীদের মনোনয়ন দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দেন।
ওই বৈঠকের পরও জাপা মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু জানিয়েছিলেন, রওশন এরশাদ যখন চাইবেন তখনই মনোনয়ন ফরম দেওয়া হবে। কিন্তু রংপুর-৩ আসনে জি এম কাদেরই প্রার্থী হবেন।
জি এম কাদের রংপুর-৩ আসনে মনোনয়নপত্র নিলেও বুধবার পর্যন্ত জমা দেননি বলে জানিয়েছেন মহানগর জাপার সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসীর। তিনি বলেছেন, বৃহস্পতিবার জমা দেওয়া হবে।
ঘোষিত তপশিলে পরিবর্তন না এলে বৃহস্পতিবারের মধ্যে মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে আগামী নির্বাচনের প্রার্থীদের। জাপার প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ বুধবার পর্যন্ত মনোনয়নপত্র না কেনায়, আগামী নির্বাচনে তিনি অংশ নেবেন কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। বুধবার রাতে গুলশানের বাসভবনে তিনি অনুসারীদের নিয়ে বৈঠকে বসেন। এই বৈঠকে নির্বাচনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা। রাত ১০টা পর্যন্ত তার গুলশানের বাসভবনে বৈঠক চলছিল।