বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান বাংলাদেশের যে কোনো জায়গায় নির্বাচনে দাঁড়াতে পারেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।

গত শনিবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বিতরণ শুরুর প্রথম দিনেই মাগুরা-১ ও ২ ও ঢাকা-১০ আসনের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন ক্রিকেটার সাকিব। এক প্রতিনিধির মাধ্যমে এই তিন আসনের মনোনয়নপত্র নেন তিনি। গত সংসদ নির্বাচনেও প্রার্থী হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন সাকিব আল হাসান।

এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ভারতের পশ্চিমবঙ্গে কত নায়ক-নায়িকা এমপি। তারা তো সরাসরি দল করে না। ভারতের মতো বৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশেও আছে। আর সাকিব আল হাসান রাজনীতি করবে, জনগণের সেবা করবে। বাংলাদেশের যে কোনো জায়গায় সে দাঁড়াতে পারে।’

মনোনয়নপত্র সংগ্রহের সময় দেশে ছিলেন না সাকিব। দেশে ফিরে গত বৃহস্পতিবার রাতে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি। তবে সাক্ষাতে কি কথা হয়েছে, তা জানা যায়নি।

‘বিএনপির এখনো সুযোগ আছে’

আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ৩০ নভেম্বর। এখনো নির্বাচনে না আসার বিষয়ে অনড় অবস্থানে বিএনপি। তবে তাদের জন্য এখনো সুযোগ শেষ হয়ে যায়নি বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

কাদের বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচনে আসবে না, এক কথায় উড়িয়ে দেওয়া যায় না। বিএনপির এখনো সুযোগ আছে। বিএনপি জোটগতভাবে না এলেও বিএনপির ভেতরের অনেকেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। শেষ পর্যন্ত ছবিটা কোথায় যায় দেখা যাক।’

রাজনৈতিক আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি এখন দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করার পথ বেছে নিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘এখন বিএনপি চোরাগোপ্তা হামলা, নাশকতা চালাচ্ছে, গাড়ি ভাংচুর- এসব অপকর্ম করছে। জনগণ নির্বাচনমুখী হয়েছে এটা সরকারের সাফল্য। এসব চোরাগোপ্তা হামলা করে নির্বাচন পন্ড, ভন্ডুল করা সম্ভব নয়। নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে।’

বিএনপির কর্মসূচির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘বিএনপি যা যা করেছে এর চেয়ে কঠোর কর্মসূচি পৃথিবীতে দৃষ্টান্ত আর নেই। আগুন দিয়ে বাস পোড়ানো, পার্কিং করা গাড়িতে ঘুমন্ত চালককে মারা, হরতাল, অবরোধ- ২০১৩/১৪ সালের পুনরাবৃত্তি। নাশকতার চেয়ে আর কী কঠোর কর্মসূচি আছে?’

নির্বাচন নিয়ে বহিঃশক্তির মন্তব্যকে আওয়ামী লীগ স্বাগত জানাচ্ছে না বলেও জানান কাদের। তিনি বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনে আমাদের মনোযোগ। আমাদের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বৃহৎশক্তির দেশগুলোর মন্তব্যে আমরা শরিক হতে চাই না।’

রোববারের মধ্যে মনোনয়ন চূড়ান্ত

আগামী রোববারের মধ্যে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চূড়ান্ত হবে বলেও জানান ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘এ পর্যন্ত চারটি বিভাগে মনোনয়ন চূড়ান্ত হয়েছে৷ আগামীকাল সম্ভব না হলে পরশু রোববার দলীয়ভাবে ৩০০ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হবে।’

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আজকের সভাতেও কিছু পুরোনো বাদও গেছে, নতুনও মনোনয়ন পেয়েছে। তবে কৌশলগত কারণে কোন কোন বিভাগের মনোনয়ন চূড়ান্ত হয়েছে তা আর প্রকাশ করা হচ্ছে না। এক সঙ্গে ৩০০ আসনের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে। দুটা দিন অপেক্ষা করুন।’

মনোনয়নে বাদ পড়ার কারণ সম্পর্কে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যারা উইনঅ্যাবল, ইলেক্টঅ্যাবল না, জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা অনেকেই হারিয়ে ফেলেছেন। নারী-পুরুষ সব প্রার্থীর ক্ষেত্রেই মনোনয়নে এটা প্রযোজ্য।’