দলের নিবন্ধন ফিরে পেতে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে জামায়াতে ইসলামীর করা আপিল খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। আপিলকারীর পক্ষে আইনজীবী উপস্থিত না থাকায় আজ রোববার প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আজ বিষয়টি শুনানির জন্য উঠলে জামায়াতের পক্ষে নিয়োজিত জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী ও অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড জয়নুল আবেদীনের ব্যক্তিগত অসুবিধার জন্য ছয় সপ্তাহ সময়ের আবেদন করেন আইনজীবী মো. জিয়াউর রহমান। তবে বারবার সময় আবেদন করায় আদালত তা নাকচ করে আপিল খারিজ করে দেন।
আদেশের পর পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে সাংবাদিকেরা জানতে চাইলে আইনজীবী মো. জিয়াউর রহমান বলেন, সিনিয়র আইনজীবীরা বিষয়টি পুনরায় শুনানি করার জন্য আবেদন করতে পারেন। তখন আদালত তা গ্রহণ করতে পারেন, নাও পারেন।
জামায়াতের বিরুদ্ধে করা আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী তানিয়া আমীর ও আহসানুল করিম।
আদেশের বিষয়ে জামায়াতের আইনজীবী মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, ‘দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং হরতালের কারণে আমাদের আইনজীবী শুনানি মুলতবি করার আবেদন দিয়েছিলেন। মুলতবির আবেদনটি আদালত আমলে নেননি। এ বিষয়ে জামায়াতে ইসলামীর পরবর্তী নির্দেশনার আলোকে আমরা আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করব।’
তিনি আরও বলেন, এখানে নিবন্ধনের বৈধতা নিয়ে মামলা ছিল, আদালত নিবন্ধন নিয়ে মতামত দিয়েছেন। তবে স্বাভাবিকভাবে জামায়াতের রাজনীতি বহাল থাকবে। সংবিধান অনুযায়ী রাজনীতি নিষিদ্ধ করার কোনো সুযোগ নেই। রাজনীতি করার সুযোগ অব্যাহত আছে এবং থাকবে।
উল্লেখ্য, রাজনৈতিক দল হিসেবে ২০০৮ সালের ৪ নভেম্বর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে নিবন্ধন দেয় নির্বাচন কমিশন। ওই নিবন্ধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০০৯ সালে রিট করেন তরীকত ফেডারেশনের তৎকালীন মহাসচিব সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরীসহ ২৫ ব্যক্তি। পরে জামায়াতকে দেওয়া নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন ২০১৩ সালের ১ আগস্ট অবৈধ বলে রায় দেন হাইকোর্ট। পরবর্তীতে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হলে জামায়াতে ইসলামী আপিল বিভাগে আবেদন করে। ওই আবেদনটি চলতি বছর শুনানির উদ্যোগ নেয় রিটকারী পক্ষ।
রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিষেধাজ্ঞা এবং দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে গত জুনে আপিল বিভাগে পৃথক আবেদন করেন তরীকত ফেডারেশনের মহাসচিব সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরীসহ কয়েকজন। তানিয়া আমীর ও আহসানুল করিম জামায়াতের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিষেধাজ্ঞা এবং দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার বিষয়ে শুনানি করতে চান। এ সময় আদালত বলেন, এটি হাইকোর্টের রায়। আপনারা আদালত অবমাননার বিষয়ে প্রপার বেঞ্চে যেতে পারেন।