প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, মনোনয়নপত্র সাবমিশন করতে গিয়ে শোডাউন করা হয়। এই শোডাউন কালচারে পরিণত হয়েছে। এতে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ হয়, সংঘাতও হতে পারে। অনলাইনে কাজ হলে এসব অনাচার কমবে, নির্বাচন ব্যবস্থা আরও সহজ ও পরিশুদ্ধ হবে। ‘অনলাইন নমিনেশন সাবমিশন সিস্টেম (ওএনএসএস) ও স্মার্ট ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট অ্যাপ’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
রোববার (১২ নভেম্বর) নির্বাচন ভবনের মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘অনলাইন নমিনেশন সাবমিশন সিস্টেম (ওএনএসএস) ও স্মার্ট ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট অ্যাপ’ উদ্বোধন করেন সিইসি। নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান, রাশেদা সুলতানা, মো. আলমগীর, মো. আনিছুর রহমান ও ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম এসময় উপস্থিত ছিলেন।
সিইসি আরও বলেন, এটা ব্যবহার খুবই সহজ। আমরা বেশ কয়েকটি উপ-নির্বাচনে অনলাইনে সাবমিশন ব্যবহার করেছি, এটা কঠিন কিছু না। পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে, প্রযুক্তির মাধ্যমে আমাদেরও এগিয়ে যেতে হবে। এটা অনেক আধুনিক হবে।
সিইসি আরও বলেন, ‘আমার এক ভাই বলছিলেন কীভাবে এটা ব্যবহার হবে। আমার একটা অভিজ্ঞতা সংক্ষেপে বলি। ৯৭ থেকে ৯৮ সালে আমি যখন কম্পিউটার ইউজ করতে শুরু করি। আমরা দেখেছি বিভিন্ন দেশ ও বিশ্বব্যাংক থেকে প্রতিনিধিরা আসতেন। তাদের উদ্দেশ্য ছিল বাণিজ্যিকভাবে যাতে কম্পিউটারগুলো কেনা হয়। এর ফলে আমাদের প্রযুক্তি শেখাচ্ছে আর বলা হচ্ছে অনলাইন শপিং। এটা ইংরেজিতে বলছে তখন ইংরেজি খুব ভালো বুঝতাম না বুঝতে গিয়ে একটু ভুল বুঝে ফেলেছিলাম। অনলাইন শপিং বলতে বুঝতে পেরেছি কম্পিউটারে শপিং করা যাবে। কিন্তু সন্দেহে ছিলাম এটা কীভাবে সম্ভব। আমি হয়তো এক কেজি গরুর মাংস ও রসগোল্লা কিনবো কিন্তু কীভাবে এটা সম্ভব। এটা কীভাবে আসবে প্রিন্টার দিয়ে না তার দিয়ে না অন্যভাবে। লজ্জায় এই বিষয়ে কাউকে কিছু জিজ্ঞাসা করি নাই। তারের ভেতর দিয়ে দুই কেজি মাংস কীভাবে আসবে তা বুঝতে পারি নাই। কিন্তু ধীরে ধীরে এখন শিখে গেছি। আমি এখন অনলাইনে আমার সমস্ত ইউটিলিটি বিলগুলো পে করি।’
তিনি আরও বলেন, বিগত ৫ থেকে ৭ বছর অনলাইন ব্যবহার করি, এটা খুবই সহজ এবং স্বস্তিদায়ক। এর আগে ২৫০ টাকার টেলিফোন বিল দিতে গিয়ে ৫০০ টাকা পে করতে হতো যে এগুলো দিয়ে আসতো। অনলাইন আমাদের জীবনকে সহজ করে দেয়। নির্বাচনের যে অ্যাপ উদ্বোধন করা হলো এটা স্বচ্ছতার ক্ষেত্রে খুব সহায়তা করবে। ভোটে দুই ঘণ্টা পরে আমি কী পেলাম, চার ঘণ্টা পরে কী পেলাম তা জানতে পারবো। এই অ্যাপ স্বচ্ছতা সৃষ্টিতে একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমি বিশ্বাস করি। কাজেই একটু কষ্ট করে আমাদের শিখে নিতে হবে। কীভাবে আমরা ব্যবহার করবো।
অনলাইন ভোটিং প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, এখনও ঘরে বসে ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা পৃথিবীর কোথাও চালু হয়নি। তবে বর্তমানে ভারত চেষ্টা করছে ঘরে বসে মোবাইলের মাধ্যমে অনলাইনে ভোটিং সিস্টেমের। ওরা সফল হলে আমরাও প্রবর্তন করতে পারবো। তবে কবে চালু হবে তার নিশ্চয়তা এখন দিতে পারছি না।