বিএনপি আজ রোববার সারা দেশে সকাল–সন্ধ্যা হরতাল কর্মসূচি শেষে টানা তিন দিনের সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি দিয়েছে । আগামী মঙ্গলবার, বুধবার ও বৃহস্পতিবার দেশব্যাপী রাজপথ, রেলপথ ও নৌপথে সর্বাত্মক অবরোধের ঘোষণা দিয়েছে দলটি।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আজ সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন। অজ্ঞাত স্থান থেকে অনলাইনে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
রিজভী বলেন, চলমান বিচারহীনতা, অপশাসন, সীমাহীন দুর্নীতি, অনাচার, অর্থ পাচার ও সিন্ডিকেটবাজির ফলে দ্রব্যমূল্যের অব্যাহত ঊর্ধ্বগতিতে বিপর্যস্ত জনগণের জীবন জীবিকা রক্ষার স্বার্থে গণতন্ত্র পুনপ্রতিষ্ঠার একা দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে গতকাল মহাসমাবেশের আয়োজন করা হয়। সেই মহাসমাবেশে হামলা, নেতা-কর্মীদের হত্যা, দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ আন্দোলনরত বিভিন্ন দলের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার এবং এক দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে রিজভী গত কয়েকদিনে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর পুলিশি হামলা ও গ্রেপ্তারের চিত্র তুলে ধরেন। রিজভী জানান, গতকাল মহাসমাবেশের সময় থেকে আজ রোববার বিকেল পর্যন্ত রাজধানীসহ সারা দেশ থেকে ৯৬০ জন নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। এ পর্যন্ত একজন সাংবাদিকসহ চারজন মারা গেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, এর মধ্যে তিনজনকে পুলিশ ও সরকারি দলের সন্ত্রাসীরা হত্যা করেছে। পুলিশ ও সরকারি দলের হামলায় তিন হাজারের বেশি নেতা-কর্মী আহত হয়েছে। গত পাঁচ দিনে দুই হাজার ৬৪০ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গতকাল নয়া পল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ পুলিশি হামলায় পণ্ড করে দেওয়ার প্রতিবাদে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আজ রোববার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল আহ্বান করেছিলেন। রোববার সকালে গোয়েন্দা পুলিশ তাঁকে গুলশানের বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায়। শাহজাহানপুরে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের বাসা, বনানীতে স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর বাসায়, মোহাম্মপুরে দলের যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের বাসায় এবং গোপীবাগে ঢাকা মহানগর দক্ষিন বিএনপির সদস্য ইশরাক হোসেনের বাসায় গোয়েন্দা পুলিশ তল্লাশি চালায়। কিন্তু তাদের কাউকে পায়নি গোয়েন্দারা।
এই সংবাদ সম্মেলনে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম ও সহ অর্থবিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।