বিশ্বকাপে নিজেদের পঞ্চম ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে কুইন্টন ডি ককের ১৭৪ রানের অনবদ্য সেঞ্চুরির পর হেনরিখ ক্লাসেনের ঝড়ো ৯০ রানের ওপর ভর করে ৩৮২ রানের পাহাড় গড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মাত্র ৮১ রান তুলতেই ৬ উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে টাইগাররা। বাংলাদেশি ব্যাটারদের আসা যাওয়ার মিছিলে একপ্রান্ত আগলে রেখে একাই লড়াই চালিয়ে যান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। টেনএন্ডারদের সঙ্গী করে তুলে নেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৪র্থ সেঞ্চুরি। বিশ্বকাপে এটি তার ৩য় সেঞ্চুরি।
মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকার দেয়া ৩৮৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা দেখেশুনেই করে দুই টাইগার ওপেনার লিটন দাস ও তানজিদ তামিম। ৬ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৩০ রান তুলেন তারা। এরপরই ছন্দপতন ঘটে বাংলাদেশের। সপ্তম ওভারে মার্কো জানসেনের শর্ট বলে কট বিহাইন্ড হন তানজিদ তামিম। ১৭ বলে ১২ রান করে সাজঘরে ফেরেন এ বাঁহাতি ব্যাটার।
এরপরের বলেই গোল্ডেন ডাক মেরে সাজঘরে ফেরেন নাজমুল হোসেন শান্ত। জানসেনের ডাউন দ্য লেগের বলে ফ্লিক করতে গিয়েছিলেন নাজমুল। কিন্তু উইকেটের পেছনে ক্লাসেনের হাতে ধরা পড়েন তিনি। এতে প্রথম বলেই কোনো রান না করে সাজঘরে ফেরেন তিনি। ক্রিজে এসে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি সাকিব আল হাসানও। লিজাড উইলিয়ামসের অফ স্টাম্পের বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া বলে খোঁচা দেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে নিজের তৃতীয় ক্যাচটি লুফে নেন হেনরিখ ক্লাসেন। ৪ বলে ১ রান করে আউট হন সাকিব।
দ্রুতই তিন উইকেট হারানোর পর মুশফিকুর রহিমের দায়িত্ব ছিল লিটনকে সঙ্গে নিয়ে বিপদ সামাল দেয়া। তবে সেটা করতে পারলেন না বাংলাদেশের অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। জেরাল্ড কোয়েতজের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে খেলতে গিয়ে ডিপ থার্ডম্যানে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৮ রান করা মুশফিক। অভিজ্ঞ এই ব্যাটার ফেরার পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি লিটনও। কাগিসো রাবাদার বলে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে পড়েছেন ২২ রান করা এই ওপেনার। উইকেটে থিতু হলেও বড় ইনিংস খেলতে পারেননি মেহেদী হাসান মিরাজ। কেশভ মহারাজের বলে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ দেন ১১ রান করা এই ব্যাটার।
৮১ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়া বাংলাদেশের হয়ে একাই লড়াই চালিয়ে যান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। সপ্তম উইকেট জুটিতে নাসুম আহমেদকে সঙ্গী করে ৪১ রানের জুটি গড়েন রিয়াদ। তিন চারে ১৯ বলে ১৯ রান করে নাসুম আউট হলে ভাঙে এই জুটি। তবে ৮ম উইকেটে হাসান মাহমুদকে সঙ্গী করে ফের লড়াই চালান বাংলাদেশের এই ‘সাইলেন্ট কিলার’। ৬৭ বলে তুলে নেন চলতি আসরের প্রথম ফিফটি।
নবম উইকেট জুটিতে মোস্তাফিজুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৪র্থ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন মাহমুদউল্লাহ। রাবাদার বলে এক রান নিয়ে ১০৪ বলে ওয়ানডে বিশ্বকাপে নিজের তৃতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। আগের দু’টি করেছিলেন ২০১৫ বিশ্বকাপে।