কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় ময়মনসিংহের নান্দাইলের একটি পরিবারের চার সদস্যের সবাই নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০ টায় উপজেলার রাজগাতী ইউনিয়নের বনাটী গ্রামে তাদের জানাজার নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। পরিবারের সবার জানাজা একসঙ্গে পরতে হবে তা ভাবেন নি কেউ। জানাজা পরতে এসে স্বজনসহ এলাকার মানুষ কান্নায় ভেঙ্গে পরেন। এসময় এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।
নিহতরা হলেন- বনাটী গ্রামের রইছ উদ্দিনের ছেলে সুজন মিয়া (৩৫), তার স্ত্রী ফাতেমা খাতুন (৩০), দুই ছেলে সজিব মিয়া (৮) ও ইব্রাহীম মিয়া (৫)।
জানা গেছে, নিহত সুজন মিয়া পেশায় একজন ডাব বিক্রেতা ছিলেন। তিনি ঢাকার মোহাম্মদপুর তাজমহল রোড এলাকায় পরিবার নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন। সেখানে আশেপাশের এলাকায় ডাব বিক্রি করে করে সংসার চালাতেন। গত বৃহস্পতিবার নিজ বাড়ি নান্দাইলে পরিবার নিয়ে ভাতিজার বিয়ের অনুষ্ঠানে আসেন। বিয়ের অনুষ্ঠানে শেষে সোমবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকা ফেরার উদ্দেশে নান্দাইল থেকে ভৈরব যান। সেখান থেকে ট্রেনে উঠেছিলেন তারা। এরপর মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনায় সুজনসহ একই পরিবারের চারজনই প্রাণ হারান।
নিহত সুজনের ভাই স্বপন মিয়া জানান, তিনি নিজেও সুজনদের সঙ্গে ঢাকায় ফিরছিলেন। তবে ঘটনার সময় তিনি পাঁচ নম্বর বগিতে থাকায় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পান তিনি।
অন্যদিকে একই ট্রেনে স্বামীর কাছে ঢাকা যাচ্ছিলেন নান্দাইলের মুশুল্লি ইউনিয়নের মেরেঙ্গা গ্রামের জুনাইদের স্ত্রী জোসনা আক্তার। তবে আর স্বামীর কাছে ফেরা হয়নি তার। ট্রেন দুর্ঘটনায় তারও মৃত্যু হয়েছে।
ট্রেন দুর্ঘটনার সঠিক তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন নিহতের স্বজনরা। এদিকে নিহতের পরিবারকে আর্থিক সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
এর আগে, সোমবার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে ভৈরব রেলস্টেশনের আউটার পয়েন্টে আন্তঃনগর এগারসিন্দুর এক্সপ্রেস ট্রেন এবং একটি মালবাহী ট্রেনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে এখন পর্যন্ত ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে পরিচয় পাওয়া গেছে ১৫ জনের। এ ঘটনায় আহত অন্তত অর্ধশতাধিক।