অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা থেকে হামাসের নজিরবিহীন হামলার প্রতিশোধে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর পাল্টা হামলায় এখন পর্যন্ত উভয়পক্ষের সাত শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। আহত হয়েছেন আরও হাজার হাজার মানুষ। শনিবার ভোরের দিকে ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামাসের রকেট বৃষ্টির মাধ্যমে শুরু হওয়া এই হামলা এখন নৃশংস ধ্বংসযজ্ঞ ডেকে এনেছে গাজায়। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর যুদ্ধবিমান থেকে টানা গোলাবর্ষণ করা হচ্ছে হামাসের বিভিন্ন স্থাপনায়। হামাসও পাল্টা গোলাবর্ষণ করছে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে।
চলমান এই সহিংস পরিস্থিতিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতারা হামাস-ইসরায়েল সংঘাত অবসানের আহ্বান জানিয়েছেন। ইসরায়েলের পাশে অবস্থান নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র্র, যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা অনেক দেশ। তবে এই সংঘাতের অবসানে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন আলাদা দুই স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কথা বলছে চীন।
রোববার বেইজিংয়ে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে হামাস-ইসরায়েল সংঘাতের বিষয়টি উঠেছে। এ সময় এক সাংবাদিক গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর ভয়াবহ সংঘাত এবং উভয়পক্ষের ব্যাপক হতাহতের ঘটনার বিষয়ে চীনের মন্তব্য জানতে চান।
জবাবে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ফিলিস্তিন-ইসরায়েলের বর্তমান উত্তেজনা ও সহিংসতা বৃদ্ধির ঘটনায় চীন গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমরা সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে শান্ত থাকার, সংযম চর্চার আহ্বান জানাই। পাশাপাশি বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষায় এবং পরিস্থিতির যাতে আরও অবনতি না ঘটে, সেজন্য অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, সংঘাতের পুনরাবৃত্তির মাধ্যমে একটি বিষয় দেখা যাচ্ছে যে, শান্তি প্রক্রিয়ার দীর্ঘস্থায়ী স্থবিরতা চলতে পারে না। দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের বাস্তবায়ন এবং ফিলিস্তিনের একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এই সংঘাত থেকে বেরিয়ে আসার মূল উপায়।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অত্যন্ত জরুরি ভিত্তিতে কাজ করতে হবে। ফিলিস্তিন প্রশ্নে আলোচনা বৃদ্ধি এবং ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের মধ্যে শান্তি আলোচনা পুনরায় শুরুর প্রক্রিয়া আরও সহজ এবং স্থায়ী শান্তির উপায় খুঁজে বের করতে হবে। চীন সেই লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে নিরলসভাবে কাজ করে যাবে।
ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতে চীনের এই অবস্থানে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে তেলআবিব। বেইজিংয়ে নিযুক্ত ইসরায়েলের দূতাবাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ইউভাল ওয়াকস বলেছেন, ইসরায়েল চীনের কাছ থেকে হামাসের হামলার বিষয়ে ‘কঠোর নিন্দা’ দেখতে পাওয়ার আশা করেছিল। কারণ তারা চীনকে ইসরায়েলের বন্ধু হিসেবে দেখে।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘যখন মানুষ খুন হচ্ছে, রাস্তায় জবাই হচ্ছে, তখন দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের ডাক দেওয়ার সময় এটা নয়।’