লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের (লক্ষ্মীপুর সদর) সংসদ সদস্য, সাবেক মন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম শাহজাহান কামাল মারা গেছেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত ৩টা ১৯ মিনিটে রাজধানী ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
এ কে এম শাহজাহান কামাল দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপসহ নানা রোগে ভুগছিলেন। স্ত্রী, এক পুত্র ও তিন কন্যাসন্তানসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন তিনি। আজ শনিবার বাদ আসর লক্ষ্মীপুর শহরের মডেল একাডেমি মাঠে নামাজে জানাজা শেষে তাঁকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে বলে নিশ্চিত করেছেন লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন।
এ কে এম শাহজাহান কামাল বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি লক্ষ্মীপুর-৩ আসন থেকে তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এ ছাড়া লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদ।
শাহজাহান কামাল ১৯৫০ সালের ১ জানুয়ারি লক্ষ্মীপুর জেলার আটিয়াতলীতে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৩ সালে লক্ষ্মীপুর মডেল হাইস্কুল থেকে এসএসসি, চৌমুহনী মদনমোহন কলেজ থেকে ১৯৬৫ সালে এইচএসসি পাস করেন এবং একই কলেজ থেকে বিএ ডিগ্রি অর্জন করেন।
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে ১৯৬৬ সালের ৬ দফা ও ১৯৬৯ সালে গণ-অভ্যুত্থানে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। এ সময় আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তির দাবিতে আন্দোলনেও সক্রিয় ভূমিকা রাখেন তিনি। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারত থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলায় সক্রিয় মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। শাহজাহান কামাল ১৯৭৩ সালে প্রথম জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে তিনি লক্ষ্মীপুর জেলায় গণ-আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। পরে তিনি নবগঠিত লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন এবং ১৯৮৫ সালে লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন।
২০১১ সালে শাহজাহান কামাল লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এ ছাড়া ২০০৯ সালে জনতা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।