প্রায় ২ হাজার ১৩৭ কোটি টাকায় ময়মনসিংহে কেওয়াটখালি সেতু নির্মাণ পূর্তকাজের চুক্তি সই হয়েছে। সেতুর নির্মাণ কাজ পেয়েছে বাংলাদেশের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্প্রেক্ট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড। নির্মাণকাজে স্প্রেক্ট্রার সঙ্গে জয়েন্ট ভেঞ্চার হিসেবে রয়েছে চায়না স্টেট কন্সট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন লিমিটেড (সিএসসিইসি)।
প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ময়মনসিংহ জেলা সদরসহ নেত্রকোনা জেলার বিজয়পুর, শেরপুর জেলার নাকুগাঁও, ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট এবং জামালপুর জেলার ধানুয়া-কামালপুরের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থলবন্দরগুলোর সঙ্গে রাজধানী ঢাকার নিরবচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হবে।
সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সড়ক ভবনের সম্মেলন কক্ষে পূর্তকাজের প্যাকেজের জন্য চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন ময়মনসিংহে কেওয়াটখালি সেতু নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক নূর-ই-আলম ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিএসসিইসি-স্পেক্ট্রা জয়েন্ট ভেঞ্চারের পক্ষে অথরাইজড রিপ্রেজেন্টেটিভ মি. সু ইয়ান। এসময় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী উপস্থিতি ছিলেন।
চুক্তির আওতায় ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর ৩২০ মিটার দীর্ঘ স্টিল-আর্চসহ ১১০০ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতু, ৬৭০.৮০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৩টি সড়ক ওভারপাস, ২৪০ মিটার দৈর্ঘ্যের ২টি রেল ওভারপাস, ৬.২০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ধীর গতির যানবাহন চলাচল লেনসহ ৪-লেন মহাসড়ক, মূল সেতু সংলগ্ন একটি টোল প্লাজা ও একটি দৃষ্টিনন্দন পর্যটনকেন্দ্র সম্বলিত বিশ্রামাগার নির্মাণ এবং প্রকল্পের আওতায় নির্মিতব্য স্টিল আর্চ সেতুর ব্রিজ হেলথ মনিটরিং সিস্টেম ও সড়কের উভয় পার্শ্বে ইউটিলিটি ডাক্ট সংযোজন করা হবে।
ভূমি অধিগ্রহণসহ প্রকল্পটির মোট ব্যয় ৩ হাজার ২৬৩ কোটি ৬৩ লাখ ১৪ হাজার টাকা। যার মধ্যে বাংলাদেশ সরকার দিচ্ছে এক হাজার ৩৫৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা ও প্রকল্প ঋণ এক হাজার ৯০৯ কোটি ১৯ লাখ টাকা। সেতুটি ময়মনসিংহের কেওয়াটখালিতে বিদ্যমান রেলসেতুর সন্নিকটে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর নির্মিত হবে। সেতুটি হবে স্টিল আর্চ ব্রিজ ধরনের। স্টিল আর্চ সেতুর মোট দৈর্ঘ্য ৩২০ মিটার ও প্রস্থ ৪২.১৫ মিটার। মূল সেতুর মোট স্প্যান সংখ্যা ২২টি। স্টিল আর্চ অংশের স্প্যান সংখ্যা ৩টি। মূল সেতুর পিয়ার সংখ্যা ২১টি। প্রকল্পটির সময়কাল ধরা হয়েছে আগামী ২০২৫ সালের ৩০ জুন।
প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ময়মনসিংহ জেলা সদরসহ নেত্রকোণা জেলার বিজয়পুর, শেরপুর জেলার নাকুগাঁও, ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট এবং জামালপুর জেলার ধানুয়া-কামালপুরের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থলবন্দরগুলোর সঙ্গে রাজধানী ঢাকার নিরবচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোণা ও সুনামগঞ্জ জেলার হাওর অঞ্চলের সাথে মূল মহাসড়ক নেটওয়ার্ক যোগাযোগ বৃদ্ধি পাবে। এছাড়াও, বিদ্যমান শম্ভুগঞ্জ সেতুর যানজট নিরসনের পাশাপাশি এ অঞ্চলের ইপিজেড এবং অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহের সাথে রাজধানী ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা সুগম হবে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মঈনুল হাসান, স্পেক্ট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খান মো. আফতাবউদ্দিন, পরিচালক আরিফ খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।