চাকরিতে যোগদানের তারিখ পেরোনোর দেড় মাস পর প্রার্থীর হাতে পৌঁছাল নিয়োগপত্র। এতে চাকরি বঞ্চিত হয়ে পোস্টমাস্টারের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ ডাক বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে দিয়েছেন মোঃ যাইনুল আবেদিন নামের এক যুবক। নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলায় এ ঘটনা ঘটেছে।
যাইনুল আবেদিন কলমাকান্দা উপজেলার বড়খাপন ইউনিয়নের বাঘসাত্রা গ্রামের মৃত আলী আকবরের ছেলে। গত বৃহস্পতিবার বিভাগীয় ডেপুটি পোস্টমাস্টার জেনারেলকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তিনি।
যাইনুল আবেদিন বলেন, ‘২০২২ সালের অক্টোবরে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের ফিল্ড অফিসার হিসেবে পরীক্ষা দিই। উত্তীর্ণ হওয়ায় চাকরির নিয়োগপত্র পোস্ট অফিসের মাধ্যমে গত ১৩ আগস্ট হাতে পাই। কিন্তু চিঠি খুলে দেখি চাকরিতে যোগদানের তারিখ ছিল ৬ জুলাই। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ২১ জুন আমার ঠিকানায় পোস্ট অফিসের মাধ্যমে রেজিস্ট্রি করে নিয়োগপত্র পাঠায়। খবর নিয়ে জেনেছি কলমাকান্দায় ওই চিঠি ২২ জুন এসে পৌঁছে। এর ১-২ দিনের মধ্যে বড়খাপন ইউনিয়ন পোস্ট অফিসে চলে আসার কথা। কিন্তু সেটা পৌঁছাতে দেড় মাসের বেশি সময় লেগেছে। পোস্টমাস্টারের গাফিলতির কারণে আমার স্বপ্ন ভেঙে গেল।’
যাইনুল আরও বলেন, ‘১৩ আগস্ট নিয়োগপত্র পেয়ে ফোন করে যোগাযোগ করি ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। যথাসময়ে যোগদান না করায় এত দিনে এই পদ শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে। তাই আর যোগদান করা যাবে না বলে তারা জানায়।’
কলমাকান্দা উপজেলার বড়খাপন ইউনিয়নের পোস্ট অফিসে গিয়ে দেখা গেছে, অফিসের কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। পোস্টমাস্টার মিনহাসুর রহমানের দেখা মেলেনি। একটা জরাজীর্ণ ঘরে ডাকবাক্স ঝোলানো থাকলেও এটি কোনো পোস্ট অফিস নয় বলে জানান স্থানীয় লোকজন। ঘরের মালিক মিনহাসুর রহমান নিজেই পোস্টমাস্টার। তবে তিনি থাকেন নেত্রকোনা শহরে।
কলমাকান্দা উপজেলা পোস্ট অফিসের পোস্টমাস্টার সুকুমার নাগ বলেন, ‘যাইনুলের চিঠিটি গত ২২ জুন আমাদের অফিসে আসে। এদিনই সেটি বড়খাপন ইউনিয়ন পোস্ট অফিসে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। দেরিতে পৌঁছানোর বিষয়ে পোস্টমাস্টার কোনোভাবেই দায় এড়াতে পারেন না। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী যাইনুলের করা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিভাগীয় কর্তৃপক্ষ আজ রোববার তদন্ত করে গেছেন।’
এ বিষয়ে নেত্রকোনা প্রধান ডাকঘরের পোস্টমাস্টার শাহেদুন্নাহার বলেন, ‘বিষয়টি দুঃখজনক। চাকরি হারানোয় যাইনুলের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। ডাক বিভাগে অভিযোগ দিয়েছেন যাইনুল। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।’
নেত্রকোনার ১০ উপজেলার ৮৪ ইউনিয়নে ডাকঘরের ১৯৫টি শাখা রয়েছে। এর মধ্যে নেত্রকোনা প্রধান ডাকঘরের অধীনেই ৪৩টি শাখা রয়েছে।