পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে দেওয়া তোশাখানা দুর্নীতি মামলার কারাদণ্ড স্থগিত করেছেন ইসলামাবাদ হাইকোর্ট। আজ মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) নতুন এ রায় দেওয়া হয়েছে।
৫ আগস্ট সরকারি কোষাগারে তোশাখানার মালামাল নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে ইসলামাবাদের এক জেলা ও দায়রা আদালত দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে তিন বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন। ইমরান খান আগামী পাঁচ বছর কোনো নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না, রায়ে এ কথাও জানান জেলা ও দায়রা আদালত।
ওই রায় ঘোষণার পরপরই ইমরান খানকে লাহোরের জামান পার্কের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এর পর থেকে তিনি পাঞ্জাবের ‘আটক’ কারাগারে সাজা ভোগ করছেন।
জেলা ও দায়রা আদালত কারাদণ্ড দেওয়ার পরই এ রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন করেন ইমরান খান। গতকাল সোমবার এ ব্যাপারে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে শুনানি হয়। হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি আমের ফারুক এবং বিচারপতি তারিক মাহমুদ জাহাঙ্গিরিকে নিয়ে গঠিত দুই সদস্যের বেঞ্চ গতকাল ঘোষণা দেন, তাঁরা ইমরান খানের আবেদনের রায়ের ব্যাপারে আজ সিদ্ধান্ত জানাবেন। সেই রায়ে আদালত বললেন, ইমরান খানের বিরুদ্ধে দেওয়া তোশাখানা দুর্নীতি মামলার কারাদণ্ড স্থগিত।
রায় ঘোষণার সময় প্রধান বিচারপতি আমের ফারুক বলেন, ‘রায়ের কপি শিগগিরই পাওয়া যাবে…আমরা এখন বলছি, ইমরানের আবেদন অনুমোদন করা হয়েছে।’
২০২২ সালের এপ্রিলে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদে আনা অনাস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতাচ্যুত হন ইমরান খান। অনাস্থা ভোটের আগে পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে চেয়েছিলেন তিনি। বিশ্লেষকেরা বলছেন, দৃশ্যত সামরিক বাহিনীর সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে ক্ষমতা হারিয়েছেন ইমরান খান। এরপর তাঁর বিরুদ্ধে বেশ কিছু মামলা হয়। রাষ্ট্রীয় উপহার কেনাবেচায় দুর্নীতিচর্চার অভিযোগে চলতি মাসে ইমরান খানকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেন একটি আদালত। দণ্ডিত হওয়ায় ইমরান খান পাঁচ বছর নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না এবং কোনো দলীয় পদে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না। পাকিস্তানে নভেম্বরে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। তবে নতুন জনশুমারির ভিত্তিতে সংসদীয় সীমানা পুনর্নির্ধারণের অজুহাত দেখিয়ে নির্বাচন আগামী বছর নাগাদ পিছিয়ে দেওয়া হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এ সময় তোশাখানা দুর্নীতি মামলার কারাদণ্ড স্থগিত করে রায় দিলেন ইসলামাবাদ হাইকোর্ট।
এদিকে এর আগে গত বুধবার পাকিস্তানের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট এক পর্যবেক্ষণে জানান, ইমরানের বিরুদ্ধে কারাদণ্ডের রায়ে গুরুতর ত্রুটি ছিল। ওই সময় সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিলেন, ইসলামাবাদ হাইকোর্ট এ রায়ের ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত নেন, সেটি দেখে পরবর্তী সময়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।