এ বছর বর্ষা ঋতু যেন নিজেকে জানান দিতে বেশ দেরি করে ফেলল। এমন গরমে স্বস্তির আরেক নাম মুষলধারে ঝরে পড়া বৃষ্টিতে ভেজা। বন্ধুরা মিলে হইচই করে মাঠে বা রাস্তায় ভেজার মজা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। রিকশায় বসে প্রিয় মানুষটির হাত ধরে বৃষ্টিতে ভিজতে কার না ভালো লাগে! তখন মনও ভিজে যায় ভালোবাসার অঝোর ধারায়। আবার একা একা বৃষ্টিতে ভিজতে গিয়েও আনমনে ভর করে একরাশ ভালো লাগা। কিন্তু ভালো লাগার পাশাপাশি বৃষ্টিতে ভিজলে অনেক উপকারও পাওয়া যায়।
স্বাস্থ্যকর চুল
বৃষ্টির পানি প্রাকৃতিকভাবে চুলের ক্লিনজার হিসেবে কাজ করে। বৃষ্টির পানিতে প্রাকৃতিক অ্যালকালাইন থাকে, যা চুলের গোড়া থেকে ময়লা ও খুশকি পরিষ্কার করে। নিয়মিত বৃষ্টির পানিতে গোসল রুক্ষ চুলকে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল করে, যার ফলে চুল চকচকে দেখায়। তবে বৃষ্টিতে ভেজার পর আবার ভালোমতো শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলতে হবে।
ভিটামিন বি১২
বৃষ্টির পানির খরতা নেই বললেই চলে। আর এই পানি অ্যালকালাইন পিএইচসমৃদ্ধ, যা আপনার মেজাজ ফুরফুরে করে তুলতে সক্ষম। বৃষ্টির পানিতে বিভিন্ন অণুজীব থাকে, যেগুলো বিপাক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভিটামিন বি১২ তৈরি করে। তাই আপনার যদি এই ভিটামিনের ঘাটতি থাকে, তবে বৃষ্টি হলে নিয়ম করে ১০ থেকে ১৫ মিনিট ভিজতে পারেন। তবে ভেজার পর তাৎক্ষণিকভাবে অবশ্যই সাবান দিয়ে ভালো করে গোসল করে নিতে হবে।
হরমোনের ভারসাম্য
অনেকেই হরমোনের ভারসাম্যহীনতায় ভুগে থাকেন। এ সমস্যারও সমাধান পাবেন নিয়মিত বৃষ্টিতে ভিজলে। গবেষণায় দেখা গেছে, বৃষ্টির পানি হরমোনের ভারসাম্যহীনতা দূর করতে সক্ষম। বৃষ্টির পানি কানের সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতেও বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করে। কানে ব্যথা বা ইনফেকশন দূর করার ক্ষেত্রে বৃষ্টির পানি বেশ উপকারী। তবে মাত্রাতিরিক্ত সময়, অর্থাৎ ১০ থেকে ১৫ মিনিটের বেশি বৃষ্টিতে ভেজা উচিত নয়, এতে ঠান্ডা লেগে যেতে পারে। ভেজার পরপরই হালকা গরম পানি দিয়ে গোসল সেরে নিতে হবে।
চর্মরোগের সমাধান
বর্ষাকালের গুমোট গরমে অনেকেই চর্মরোগে ভুগে থাকেন। ত্বকের বিভিন্ন ফুসকুড়ি ও চুলকানির সমাধান আছে বৃষ্টির শীতল পানিতে। বৃষ্টিতে ভিজলে বা নিয়মিত গোসল করলে চুলকানি ও ত্বকের খসখসে ভাব চলে যায়। এটা প্রমাণিত যে বৃষ্টির পানি আপনার ত্বকের তাপমাত্রার ভারসাম্য বজায় রাখে এবং গ্রীষ্মের ফুসকুড়ি থেকে মুক্তি দেয়।
মন ভালো হয়
বৃষ্টিতে ভিজলে শরীর থেকে ‘হ্যাপিনেস হরমোন’, অর্থাৎ এন্ডোরফিন ও সেরাটোনিন নামক নিঃসৃত হয়। এ জন্য বৃষ্টিতে ভিজলে দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
তবে খেয়াল রাখতে হবে, ঋতুর প্রথম বৃষ্টির পানি গায়ে না লাগানোর। কারণ, ঋতুর প্রথম বৃষ্টির পানিতে বিভিন্ন ক্ষতিকর পদার্থ মিশে থাকে। প্রথম বৃষ্টি এড়িয়ে গিয়ে পরবর্তী বৃষ্টিতে আপনি নিরাপদে ভিজতে পারেন। তো আর দেরি কিসের, সুযোগ পেলেই নেমে পড়ুন ঝুমবৃষ্টিতে ভিজতে!
তথসূত্র : ফেমিনা, ভেরি ওয়েলফিট