রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস তাহের আহমেদ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামির ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। তারা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও কেয়ারটেকার মো. জাহাঙ্গীর আলম।
বৃহস্পতিবার রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে রাত ১০টা ১ মিনিটে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে এই দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। জল্লাদ আলমগীর হোসেনেরর নেতৃত্বে আটজন জল্লাদ এ ফাঁসি কার্যক্রম সম্পন্ন করেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছে কারা কর্তৃপক্ষ।
এদিন সন্ধ্যা থেকে কারাগারে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। কারা ফটকে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ ও কারারক্ষী। সন্ধ্যার পর দুই আসামির পরিবারের সদস্যরা কারাগারে উপস্থিত হন।
এর আগে গত মঙ্গলবার দুপুরে আসামি মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দীন ও জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে স্বজনরা শেষ সাক্ষাৎ করেন।
অধ্যাপক ড. এস তাহের আহমেদ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামির প্রাণভিক্ষার অবেদন রাষ্ট্রপতির কর্তৃক নাকচের চিঠি গত ৫ জুন রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারা কর্তৃপক্ষের কাছে এসে পৌঁছায়। এছাড়া মৃত্যুদণ্ড স্থগিত চেয়ে আসামি জাহাঙ্গীর আলমের ভাইয়ের করা সর্বশেষ আবেদন ২৫ জুলাই খারিজ করে দিয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রাবির শিক্ষকদের আবাসিক কোয়াটারের বাসা থেকে নিখোঁজ হন অধ্যাপক তাহের। ২ ফেব্রুয়ারি বাসাটির পেছনের ম্যানহোল থেকে এ শিক্ষকের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ৩ ফেব্রুয়ারি অধ্যাপক তাহেরের ছেলে সানজিদ আলভি আহমেদ নগরীর মতিহার থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পরে আদালতে তিনজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। হত্যার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়, একই বিভাগে অ্যাকাডেমিক কমিটির প্রধান ড. তাহের সহযোগী অধ্যাপক মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিনকে অধ্যাপক পদে উত্তীর্ণ হবার সুপারিশ না করায় ক্ষুব্ধ হয়ে এ শিক্ষককে হত্যা করা হয়। পরে মরদেহ মোট চারজন মিলে বাসার পেছনে ম্যানহোলে ঢুকিয়ে রাখে। ২০০৮ সালের ২২ মে রাজশাহীর দ্রুত বিচার আদালতের বিচারক ৪ জনকে ফাঁসি ও দুজনকে খালাস দেন। দণ্ডিত অন্যরা হলেন, জাহাঙ্গীরের ভাই নাজমুল ও শ্যালক সালাম। তবে খালাস পান তৎকালীন রাবি শিবির সভাপতি মাহবুবুল আলম সালেহী। পরে উচ্চ আদালতে আপিলের মাধ্যমে নাজমুল এবং সালামের ফাঁসির রায় কমিয়ে যাবজ্জীবন সাজা করা হয়।