রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ২৩ শর্তে আগামীকাল বুধবার বিএনপিকে সমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। সমাবেশের সময় বেধে দেওয়া হয়েছে দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
একইসঙ্গে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগকে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে শান্তি সমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছে ডিএমপি। আওয়ামী লীগকে বেলা ৩টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সময় বেধে দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য শর্তগুলো দুই দলের জন্য একই।
আজ মঙ্গলবার ডিএমপি বিএনপি ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগকে আলাদাভাবে চিঠি দিয়ে এই অনুমতির কথা জানিয়েছে।
বুধবার ঢাকায় সমাবেশ করে সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়ার কথা জানিয়েছে বিএনপি। এজন্য নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের অনুমতি চেয়ে পুলিশের কাছে আবেদন করেছিল দলটি। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, সরকার পতনের এক দফার আন্দোলনের ঘোষণায় তাঁদের নতুন কর্মসূচিও থাকবে।
এদিকে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে আগামীকাল বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেটে শান্তি সমাবেশ ঘোষণা করেছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। বিএনপির সমাবেশের দিন বড় জমায়েতের প্রস্তুতি নিচ্ছে ক্ষমতাসীন দলটি।
যেসব শর্তে আওয়ামী লীগ–বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি
১. এই অনুমতিপত্র স্থান ব্যবহারের অনুমতি নয়, স্থান ব্যবহারের জন্য অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে অনুমোদন নিতে হবে;
২. স্থান ব্যবহারের অনুমতিপত্রে উল্লেখিত শর্তাবলী যথাযথভাবে পালন করতে হবে;
৩. অনুমোদিত স্থানেই সমাবেশের যাবতীয় কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখতে হবে;
৪. নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পর্যাপ্ত সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক (দৃশ্যমান আইডি কার্ডসহ) নিয়োগ করতে হবে;
৫. স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সমাবেশস্থলের চারদিকে উন্নত রেজ্যুলেশনযুক্ত সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে;
৬. নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সমাবেশে আগতদের হ্যান্ড হেল্ড মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে (ভদ্রোচিতভাবে) চেকিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে ;
৭. নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সমাবেশস্থলে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা রাখতে হবে;
৮. শব্দ দূষণ প্রতিরোধে সীমিত আকারে মাইক/শব্দযন্ত্র ব্যবহার করতে হবে, কোনক্রমেই অনুমোদিত স্থানের বাইরে মাইক/শব্দযন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না;
৯. অনুমোদিত স্থানের বাইরে প্রজেক্টর স্থাপন করা যাবে না;
১০. অনুমোদিত স্থানের বাইরে, রাস্তায় বা ফুটপাতে কোথাও লোক সমবেত হওয়া যাবে না;
১১. আযান, নামাজ ও অন্যান্য ধর্মীয় সংবেদনশীল সময় মাইক/শব্দযন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না;
১২. ধর্মীয় অনুভূতির ওপর আঘাত আসতে পারে এমন কোন বিষয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শণ বক্তব্য প্রদান বা প্রচার করা যাবে না;
১৩. সমাবেশের কার্যক্রম ব্যতিত মঞ্চকে অন্য কোন কাজে ব্যবহার করা যাবে না;
১৪. সমাবেশ শুরুর ২ (দুই) ঘন্টা পূর্বে লোকজন সমবেত হওয়ার জন্য আসতে পারবে;
১৫. অনুমোদিত সময়ের মধ্যে (১৪.০০ ঘটিকা হতে ১৭.০০ ঘটিকা) সমাবেশের সার্বিক কার্যক্রম শেষ করতে হবে;
১৬. কোনো অবস্থাতেই মূল সড়কে যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না;
১৭. আইন-শৃঙ্খলা পরিপন্থি ও জননিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় এমন কার্যকলাপ করা যাবে না;
১৮. রাষ্ট্রবিরোধী কোনো কার্যকলাপ ও বক্তব্য প্রদান করা যাবে না;
১৯. উস্কানিমূলক কোনো বক্তব্য প্রদান বা প্রচারপত্র বিলি করা যাবে না;
২০. কোনো ধরনের লাঠি-সোঁটা/ব্যানার, ফেস্টুন বহনের আড়ালে লাঠি, রড ব্যবহার করা যাবে না;
২১. আইন-শৃংখলার অবনতি ও কোন বিরূপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে আয়োজনকারী কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবেন;
২২. উল্লেখিত শর্তাবলী যথাযথভাবে পালন না করলে তাৎক্ষণিকভাবে এই অনুমতির আদেশ বাতিল বলে গণ্য হবে;
২৩. জনস্বার্থে কর্তৃপক্ষ কোন কারণ দর্শানো ব্যতিরেকে এই অনুমতি আদেশ বাতিল করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করেন।