আজ ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস। এবারের প্রতিপাদ্য ‘প্লাস্টিক দূষণ সমাধানে শামিল হই সকলে’, আর স্লোগান ‘সবাই মিলে করি পণ, বন্ধ হবে প্লাস্টিক দূষণ’।
১৯৭২ সালে জাতিসংঘের মানবিক পরিবেশ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সম্মেলনে নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচির (ইউএনইপি) উদ্যোগে প্রতিবছর ৫ জুন সারা বিশ্বে ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস’ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
বাংলাদেশেও বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচি পালন করে থাকে। দিবসটি উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে পরিবেশ মেলা ও বৃক্ষমেলা ২০২৩ এর আয়োজন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর উদ্বোধন করবেন। এবার জাতীয় বৃক্ষমেলার প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘গাছ লাগিয়ে যত্ন করি, সুস্থ প্রজন্মের দেশ গড়ি’।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন দিবসটি উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে প্রকৃতির অক্ষুণ্ণতা বজায় রেখে প্রতিবেশ সংরক্ষণে সম্মিলিত প্রচেষ্টা চালানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেছেন, মানব সম্প্রদায় ও প্রাণিকূলের অস্তিত্বের জন্য দূষণমুক্ত নির্মল পরিবেশের বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, মানবসৃষ্ট বিভিন্ন উপায়ে আমরা প্রতিনিয়ত পরিবেশ দূষণ করছি। পরিবেশ দূষণকে আরও বেশি সমস্যাসংকুল করে তুলেছে প্লাস্টিকজাত পণ্যের অপরিকল্পিত ব্যবহার। প্লাস্টিক দূষণ প্রতিরোধে সরকারের পাশাপাশি ব্যবসায়ী, ভোক্তাসাধারণসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
প্লাস্টিক দূষণ প্রতিরোধে প্লাস্টিক পণ্যের পুনর্ব্যবহার ও এর টেকসই বিকল্প উদ্ভাবন খুবই জরুরি উল্লেখ করে মো.সাহাবুদ্দিন বলেন, প্রকৃতির অক্ষুণ্নতা বজায় রেখে সবাই মিলে পরিবেশ ও প্রতিবেশ সংরক্ষণ করবো এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সুখী-সুন্দর সোনার বাংলা বিনির্মাণ করবো- এটাই হোক সকলের ব্রত।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেছেন, সরকার প্রকৃতি ও পরিবেশ সংরক্ষণের ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে নানাবিধ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।
তিনি বলেন, জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-২০৩০ অর্জনে আমাদের সরকার প্রকৃতি ও পরিবেশ সংরক্ষণের ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে নানাবিধ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। নতুন নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং শিল্প-প্রতিষ্ঠান স্থাপনে যাতে প্রতিবেশ ও পরিবেশসম্মত বিধিব্যবস্থা পরিপালন করা হয় সে দিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সমুদ্র প্রতিবেশ সংরক্ষণ, সমুদ্র দূষণরোধ ও সমুদ্র সম্পদের টেকসই ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমকে উন্নয়নের মূলধারায় অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্যে আমরা ব্লু-ইকোনমি কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছি।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, পরিবেশ সংরক্ষণে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও বাংলাদেশে ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালন করা হচ্ছে জেনে তিনি আনন্দিত। বিশ্ব পরিবেশ দিবসের এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘প্লাস্টিক দূষণ সমাধানে সামিল হই সকলে’ অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, পরিবেশই প্রাণের ধারক ও বাহক। পরিবেশ ও প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক। জনসংখ্যা বৃদ্ধি, দ্রুত নগরায়ন এবং সম্পদের অপরিমিত ব্যবহারের ফলে প্রকৃতি ও পরিবেশ আজ অনেকটাই বিপর্যস্ত, হ্রাস পাচ্ছে জীববৈচিত্র, বিঘ্নিত হচ্ছে প্রাকৃতিক ভারসাম্য।
প্রসঙ্গত, ‘পরিবেশ মেলা’ চলবে ৫ থেকে ১১ জুন পর্যন্ত এবং ‘বৃক্ষমেলা’ চলবে ৫ থেকে ২৬ জুন এবং ১ থেকে ১২ জুলাই পর্যন্ত। প্রতিদিন মেলা চলবে সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত।