সহকারী শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড ও প্রধান শিক্ষকদের ৯ম গ্রেডে বেতন নির্ধারণসহ ৫ দফা দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান করেছে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি ময়মনসিংহ জেলা শাখা।
কেন্দ্রীয় কমিটির অংশ হিসাবে বৃহস্পতিবার (১৮ মে) দুপুরে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক মোস্তাফিজার রহমানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর এ স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
এসময় বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ময়মনসিংহ জেলা শাখার নির্বাহী সভাপতি শেখ গিয়াস উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ ভূঁইয়া, শিক্ষক আব্দুল জলিল, আব্দুল লতিফ খান, গোলাম কিবরিয়া, আমিরুল ইসলাম, আমজাদ হোসেন খান, জামাল উদ্দিন, রোখসানা পারভীন, শেলী রানী সরকার, বিলকিস আক্তার রুমাসহ বিভিন্ন উপজেলার শিক্ষক প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, স্বাধীনতার ৫২ বছরেও প্রাথমিক শিক্ষায় নানা ধরণের বৈষম্য বিরাজ করছে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে প্রাথমিক থেকে সর্বোচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পর্যন্ত শিক্ষকদের বেতন কাঠামো প্রায় একই রকম। অথচ বাংলাদেশে শিক্ষার বুনিয়াদী কাঠামো প্রাথমিক স্তরের শিক্ষকদের বেতন নিম্ন পর্যায়ে। দেশে একজন প্রাথমিক শিক্ষক যে বেতন পান তাতে বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী তার সংসার চালানো খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার।
এতে আরও বলা হয়, প্রধান শিক্ষকদের চাকরি দ্বিতীয় শ্রেণীর মর্যাদায় উন্নীত করা হলেও ১০ম গ্রেড প্রদানের বিষয়টি দীর্ঘদিন যাবত ঝুলে আছে। অন্যদিকে সহকারী শিক্ষকদের ১৩তম গ্রেডে উন্নীত করা হলেও প্রধান শিক্ষকদের সাথে সহকারী শিক্ষকদের গ্রেড ব্যবধানে এখনো বৈষম্য রয়েছে। গত ২০১২ সালের ১৫ মে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদেরকে তৃতীয় শ্রেণি থেকে দ্বিতীয় শ্রেণীর মর্যাদায় উন্নীত করা হয়। পরবর্তীতে সিনিয়রিটির ভিত্তিতে সিনিয়র শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণী থেকে প্রথম শ্রেণীতে উন্নীত করা হয়েছে। এর পূর্বে ডিপ্লোমা নার্স, কৃষি বিভাগের ব্লক সুপারভাইজার, ইউনিয়ন ভূমি তহশীলদার ও পুলিশের সাব ইন্সপেক্টরগণকে দ্বিতীয় শ্রেণীর মর্যাদা প্রদানসহ তাদের পদ-পদবীতেও পরিবর্তন আনা হয়েছে।
অথচ আজ পর্যন্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন কাঠামো উন্নয়নে কোন পরিবর্তন হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা বেকারত্ব ঘুচাতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার পেশায় নিয়োজিত হয়েও এই পেশায় থাকার আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। সুযোগ পেলেই তারা চলে যাচ্ছেন। প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়নে এ বিষয়টি অন্যতম প্রধান অন্তরায়। সারা দেশে এখন প্রায় দুই- তৃতীয়াংশ শিক্ষক গ্রেজুয়েট থেকে পোস্ট গ্রেজুয়েট ডিগ্রিধারী।
তাদের দাবি, প্রধান শিক্ষকদের প্রথম শ্রেণীর মর্যাদাসহ ৯ম গ্রেড এবং সহকারী শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণীর মর্যাদাসহ ১০ম গ্রেড প্রদান, সহকারী শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড ও প্রধান শিক্ষকদের ৯ম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ করতে হবে। এক্ষেত্রে সরাসরি নিয়োগপ্রাপ্ত, পদোন্নতিপ্রাপ্ত, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত, প্রশিক্ষণবিহীন ইত্যাদি কোন প্রকার বৈষম্য রাখা যাবে না। একই সাথে প্রধান শিক্ষকদের বকেয়া টাইম স্কেল প্রাপ্তি এবং ১০ বছর ও ১৬ বছর চাকরিকালীন উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির সকল জটিলতা নিরসন করতে হবে।