আজ সোনামসজিদ স্থলবন্দরের সন্মেলন কক্ষে সোনামসজিদ স্থলবন্দরের আমদানীকারক, রপ্তানীকারক, সি এন্ড এফ এজেন্ট ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সাথে একটি মতবিনিময় সভা শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। বর্ণিত সভায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জনাব এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
সভায় স্থলবন্দরের বিভিন্ন সমস্যাসহ আমদানীকৃত পণ্য বিশেষ করে ভোজ্যতেল, চিনি ও পেঁয়াজের মূল্য কিভাবে স্থিতিশীল রাখা যায় সে বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
সভায় আমদানিকারকগণ বলেন ভারত থেকে পিয়াজ আমদানির আইপি প্রদান করা হলে, অতি দ্রুত পণ্য বন্দর থেকে খালাসের ব্যবস্থা করা হলে, এলসি সমস্যা দূর হলে এবং কাষ্টমস নির্ধারিত সময়ে পণ্য খালাস করলে আমদানিকৃত পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখা সম্ভব হবে।
সভায় কাস্টমস প্রতিনিধি বলেন আমদানীকৃত গাড়ী কনসাইনমেন্ট অনুযায়ী প্রবেশ করলে দ্রুত পন্য খালাস করা যাবে। অনেক সময় সি এন্ড এফ বেলা ১২ টার পরে বিল অফ এন্ট্রি দাখিল করার কারণে পণ্য খালাসে বিলম্ব হয়।
সভাপতি সভায় বলেন ভোক্তা অধিকার নিয়ে আমরা সবসময় কাজ করছি। এক্ষেত্রে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনটি একটি অন্যতম যুগোপযোগী আইন। কিন্তু উপজেলায় টেষ্টিং ল্যাবের ব্যবস্থা না থাকায় অনেক সময় আইনটি প্রয়োগে সমস্যার সন্মুখীন হতে হয় ।খাদ্যে ভেজাল প্রমাণের জন্য টেষ্টের প্রয়োজন হয়। সভাপতি আরও বলেন আজকের সভায় প্রধান অতিথির নিকট থেকে ব্যবসায়ীবৃন্দ আলোচনার মাধ্যমে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্দেশনা পাবেন যা দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হবে।
সভায় মহাপরিচালক বক্তব্যের শুরুতেই বর্ণিত সভা আয়োজনের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ প্রদান করেন। মহাপরিচালক বলেন এই মতবিনিময় সভা আয়োজনের উদ্দেশ্য হচ্ছে ব্যবসায়ীরা সকল আইন মেনে অবাধে ব্যবসায় করবে এবং ভোক্তারা ন্যায্য মূল্যে পণ্য পাবে।
তিনি সভায় বলেন বর্তমানে পিয়াজের যে বাজার মূল্য তা অস্বাভাবিক। এই মূল্য নিয়ন্ত্রণ করার লক্ষ্যে সকলকে একত্রিত হয়ে কাজ করতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজন স্মার্ট বাজার ব্যবস্থা। সেক্ষেত্রে স্মার্ট বাজার ব্যবস্থা গড়ার লক্ষ্যে প্রয়োজন অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সকলে সমন্বিত হয়ে কাজ করা যেন তারা তাদের অবৈধ কার্যক্রম করতে না পারে।
মহাপরিচালক আরও বলেন অনেক সময় দেখা যায় সি এন্ড এফ এজেন্টরা পণ্য খালাসের জন্য একই সময়ে কাস্টমসে বিল অব এন্ট্রি দাখিল করে ফলে সময়ক্ষেপণ হয় এবং পণ্য খালাসে বিলম্ব হয়। এক্ষেত্রে প্রথমে পঁচনশীল পণ্যগুলো দ্রুত খালাসের ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।
তিনি সভায় পণ্যবাহী ট্রাকগুলো সুশৃঙ্খলভাবে রাখার বিষয়ে সংশ্লিষ্টগণকে নজর দিতে বলেন। তিনি বলেন পণ্যবাহী ট্রাকগুলো যেন রাস্তায় রেখে রাস্তা ব্লক করা না হয় সেক্ষেত্রে ট্রাক মালিক সমিতি শৃঙ্খলার সাথে ট্রাকগুলো রাখার ব্যবস্থাসহ উপজেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দকে পরামর্শ প্রদান করেন।
মহাপরিচালক সভায় বলেন আমদানীকৃত পণ্যের মূল্য বিশেষ করে ভোজ্যতেল, চিনি এবং পিয়াজের মূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে সভায় প্রাপ্ত তথ্য ও মতামত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট সুপারিশসহ প্রতিবেদন প্রেরণ করা হবে।
পরিশেষে মহাপরিচালক সকলে সমন্বিত হয়ে কাজ করলে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে এই আশাবাদ ব্যক্ত করে সভার কার্যক্রম শেষ করেন।
অপরদিকে অদ্য ১৮মে ২০২৩ তারিখ বেলা ১২.০০ টায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসনের সন্মেলন কক্ষে ক্যাব প্রতিনিধি , চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এর নেতৃবৃন্দ, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি এবং জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয় ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের কর্মকর্তাগণের সাথে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসক জনাব এ কে এম গালিব খাঁন এর সভাপতিত্বে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। বর্ণিত সভায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জনাব এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সভায় অংশগ্রহণকারীরা ভোক্তা অধিকার ও দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখার বিষয়ে বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। এর প্রেক্ষিতে মহাপরিচালক দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি সোনামসজিদ স্থলবন্দরের বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরে পণ্য খালাসের সকল প্রতিবন্ধকতা দূর করার জন্য জেলা প্রশাসন এবং চেম্বার নেতৃবৃন্দকে পরামর্শ প্রদান করেন। আলোচনা শেষে মহাপরিচালক সকলকে সমন্বিত হয়ে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণে কাজ করার আহবান জানান।
সভায় সভাপতি বলেন ক্রয়ের ক্ষেত্রে ভোক্তাকে পণ্য বা সেবা দেখে যাচাই করে ক্রয় করতে হবে এবং ব্যবসায়ী বিক্রয়ের ক্ষেত্রে সকল আইন অনুসরণ করে পণ্য বা সেবা উৎপাদন, বিপণন ও বিক্রয় করবেন। তিনি অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সকলকে সোচ্চার হওয়ার বিষয়ে বলেন। তিনি আরও বলেন খাদ্যে ভেজাল যারা করছেন তাদের বিষয়ে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সভাপতি অধিদপ্তরের বর্তমান কার্যক্রমের প্রশংসা করেন এবং অধিদপ্তরের সকল কাজে সহযোগীতা প্রদানের বিষয়ে বলেন। পরিশেষে তিনি একসাথে কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ায় সকলের সহযোগীতা কামনা করে সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।