আজ রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফারেন্স কক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ ও শিক্ষার্থীবৃন্দের সাথে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন,২০০৯ বিষয়ক একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো: সাজ্জাদ হোসেন, মূখ্য আলোচক হিসেবে ছিলেন জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব ) জনাব এ.এইচ.এম. সফিকুজ্জামান।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক( ছাত্র কল্যাণ) প্রফেসর ড. ইঞ্জিনিয়ার মোঃ রবিউল আওয়াল।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক জনাব মোহাম্মদ সেলিমসহ সহকারী পরিচালকগণ ,প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক ও সহকারী পরিচালক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক জনাব মোহাম্মদ সেলিম এর স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে সেমিনারের কার্যক্রম শুরু হয়। তিনি সেমিনারে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।
ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইনটি ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণে কিভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে সে বিষয়ে একটি প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক জনাব জান্নাতুল ফেরদাউস এবং ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সাম্প্রতিক কার্যক্রম সম্পর্কিত একটি ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
সেমিনারে প্রধান অতিথি এবং সভাপতি ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ এর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিকের বিশ্লেষণধর্মী বক্তব্য প্রদান করেন।
আলোচনায় সেমিনারের প্রধান অতিথি শুরুতেই বলেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের গৃহীত পদক্ষেপের ফলে পূর্বের যেকোনো সময়ের তুলনায় ভোক্তাদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি আরও বলেন যেই যে ধর্মই পালন করি না কেন স্ব স্ব ধর্মের প্রতি প্রকৃত ধর্মীয় চেতনাবোধ জাগ্রত হলে অপরাধ প্রবণতা ধীরে ধীরে হ্রাস পাবে। তিনি পরিশেষে সকলকে নিজেদের অধিকার সর্ম্পকে সচেতন হওয়ার বিষয়ে আহবান জানান।
সভায় সভাপতি তাঁর বক্তব্যে আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, এখন সময় এসেছে ভোক্তা স্বার্থ সংরক্ষণে তরুণ সমাজের এগিয়ে আসার। সমাজ পরিবর্তনে তরুনদের কার্যকরী ভূমিকা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি ভোক্তা বান্ধব স্থিতিশীল বাজার ব্যবস্থা বিনির্মাণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।
মহাপরিচালক আলোচনার শুরুতেই এই সেমিনারের মাধ্যমে শিক্ষক-শিক্ষার্থীবৃন্দকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন বিষয়ে সচেতন করার বিষয়ে সহযোগীতা প্রদানের জন্য উপাচার্য মহোদয় ও সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান।
মহাপরিচালক বর্তমান সমাজে বিদ্যমান ভোক্তা অধিকার বিরোধী কাজের স্বরূপ তুলে ধরে তা প্রতিরোধে অধিদপ্তরের গৃহীত কার্যক্রম সর্ম্পকে সকলকে অবগত করেন। মহাপরিচালক বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণে কাজ করে যাচ্ছি কিন্তু এই ক্ষেত্রে সফল হতে হলে প্রয়োজন ভোক্তাদের সচেতনতা। এই সচেতনতার অংশ হিসেবে আয়োজন করা হয়েছে এই সেমিনার। তিনি আরও বলেন, ভোক্তাদের অধিকার নিশ্চিত বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণ এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের স্মার্ট বাংলাদেশ এর অংশ হিসেবে অধিদপ্তর যুগোপযোগী পদক্ষেপের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দিচ্ছে ও ভোক্তাদের সচেতন করার চেষ্টা করছে। অধিদপ্তরের নিজস্ব ফেসবুক পেজ, ইউটিউব চ্যানেল, CCMS(Consumer Complaint Management System) এর মাধ্যমে অভিযোগ দায়ের করা এই পদক্ষেপেরই প্রকৃষ্ট উদাহরণ। তিনি আলোচনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিন এবং ডাইনিংসহ আশেপাশের রেস্টুরেন্টগুলোতে সাধারণ তদারকির বিষয়েও তুলে ধরেন।
মহাপরিচালক উপস্থিত শিক্ষার্থীবৃন্দকে ভোক্তা-অধিকার সম্পর্কে সচেতন করার লক্ষ্যে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্দেশনা প্রদান করেন এবং শিক্ষার্থীদের নিজে সচেতন হয়ে অন্যদের মাঝে তা প্রচার করার অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, তরুণ সমাজ দায়িত্বশীল হলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারস্বপ্নের স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ সহজ হবে।
মুক্ত আলোচনায় মহাপরিচালক অংশগ্রহণকারীবৃন্দের ভোক্তা -অধিকার আইন সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর প্রদান করেন।
আলোচনা শেষে মহাপরিচালক শিক্ষার্থীবৃন্দকে ভোক্তা-অধিকার সম্পর্কে সচেতন হয়ে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণে সকলে সমন্বিতভাবে যেন কাজ করে এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অপরদিকে অদ্য ১৭ মে ২০২৩ তারিখ সন্ধ্যা ৭.০০ টায় রাজশাহী জেলা প্রশাসনের সন্মেলন কক্ষে ক্যাব প্রতিনিধি , রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স এর সদস্য, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি এবং জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের কর্মকর্তাগণের সাথে রাজশাহী জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। বর্ণিত সভায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জনাব এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সভায় অংশগ্রহণকারীরা ভোক্তা অধিকার ও দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখার বিষয়ে বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। এর প্রেক্ষিতে মহাপরিচালক দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্দেশনা প্রদান করেন। আলোচনা শেষে মহাপরিচালক সকলকে সমন্বিত হয়ে কাজ করার বিষয়ে আহবান জানান।
সভায় সভাপতি বলেন অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সকলকে সোচ্চার হতে হবে। তিনি আরও বলেন খাদ্যে ভেজাল যারা করছেন তাদের বিষয়ে তথ্য দিন আমরা আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। সভাপতি অধিদপ্তরের বর্তমান কার্যক্রমের প্রশংসা করেন এবং অধিদপ্তরের সকল কাজে সহযোগীতা প্রদানের বিষয়ে বলেন। পরিশেষে তিনি একসাথে কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে সকলের সহযোগীতা কামনা করে বক্তব্য শেষ করেন।