ময়মনসিংহের গৌরীপুর আউস ধানের আবাদ বাড়াতে কৃষকদের বিনামূল্যে আউসের চারা বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছেন কৃষক শেখ সাদী। কৃষকরা যেন বিনামূল্যে আউসের চারা পায় সেজন্য তিনি চালু করেছেন হটলাইন। কৃষকরা মুঠোফোনে যোগাযোগ করলেই আউসের চারা নিয়ে হাজির হচ্ছেন শেখ সাদী।
জানা গেছে, কৃষক শেখ সাদীর বাড়ি ময়মনসিংহের গৌরীপুরের মাওহা ইউনিয়নের করমড়িয়া গ্রামে। প্রতিবছর বোরো ধান কাটার পর আউস মৌসুমে মাওহা ইউনিয়নের অধিকাংশ জমি অনাবাদি পড়ে থাকে। বিষয়টি দেখে ভালো লাগে কৃষক শেখ সাদীর।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা, এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি রাখা যাবে না এমন ঘোষণায় অনুপ্রাণিত হয়ে কৃষক শেখ সাদী বোরো ও আমন মৌসুমের মধ্যবর্তী সময়ে অনাবাদি জমিতে আউস আবাদের জন্য ব্রি ৪৮ জাতের ধানের বীজতলা তৈরি করেন।
ইচ্ছা জাগে নিজের জমি চাষের পাশাপাশি গ্রামের অন্য কৃষকদেরও বিনামূল্যে ধানের চারা দিবেন আউস আবাদ করার জন্য। এজন্য চালু করেন হটলাইন। কৃষকরা আউস আবাদের জন্য ফোন করলেই চারা নিয়ে হাজির হন শেখ সাদী।
গত ১১ মে উপজেলা কৃষি অফিসার লুৎফুন্নাহার লিপি আনুষ্ঠানিক হটলাইনন উদ্বোধন করেন। ওই দিন এই কৃষি কর্মকর্তার উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিক ভাবে ৩৫ জন কৃষককে আউসের চারা তুলে দেয়া হয়।
শেখ সাদীর আউশের বীজতলায় ১০০০ কাঠা জমিতে আউস আবাদের চারা রয়েছে। হটলাইনে ফোন করে শুধুমাত্র গৌরীপুরের কৃষকরা চারা নিতে পারবেন।
করমড়িয়া গ্রামের কৃষক গোলাপ মিয়া বলেন, এই অঞ্চলে আউস চাষ হয় না বললেই চলে। চারার সংকটের কারণে কৃষকের আগ্রহ কম থাকে। মোবাইলে যোগাযোগ করে শেখ সাদীর কাছ থেকে বিনামূল্যে এক বিঘা জমির চারা নিয়েছি আবাদের জন্য।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে চলতি আউস মৌসুমে উপজেলায় ২২০ হেক্টর জমিতে আউসের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কৃষককে আউশ চাষে আগ্রহী করতে দেয়া হবে প্রণোদনা। পাশাপাশি আউস আবাদ বাড়াতে কৃষক শেখ সাদীর বিনামূল্যে চারা বিতরণের বিয়ষটি আউশ চাষ বাড়াতে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে।
কৃষক শেখ সাদী বলেন, বোরো চাষের পর অনাবাদি জমিতে কৃষককে আউস আবাদের কথা বললে তারা চারার সংকটের কথা বলে। পরে আমি সিদ্ধান্ত নেই সব কৃষককে বিনামূল্যে চারা দিব। হটলাইনে যোগাযোগ করে ৩৫ জন কৃষক চারা পেয়েছে। আশপাশের কৃষক ভাইদের আমার মোবাইল ফোন নাম্বার দেওয়া আছে। চাইলে আরও অর্ধশতাধিক কৃষককে চারা দিতে পারব।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লুৎফুন্নাহার লিপি বলেন, আমরা আউস উৎপাদন বাড়াতে কৃষকদের প্রণোদনা দিয়ে থাকি। আউশ আবাদ বাড়াতে কৃষক শেখ সাদীর উদ্যোগ খুব ব্যতিক্রম লাগলো। সাধারণত আমরা সরকারি ভাবে বিনামূল্যে সার বা বীজ বিতরণ করি। কিন্ত একজন কৃষক নিজের উদ্যোগে চারা বিতরণ করছে এতে আমি খুব আনন্দিত।