শেরপুরে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চালক উজ্জল মিয়াকে হত্যা করে ইজিবাইক ছিনতাইয়ের ঘটনায় মূল আসামিসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১৪’র সদস্যরা।
গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছে, হত্যাকাণ্ডে জড়িত প্রধান আসামি শেরপুর সদর উপজেলার শামীম মিয়া এবং চোরাই ইজিবাইকটি ক্রয়-বিক্রয়ের সাথে জড়িত আবুল হোসেন , জামালপুর সদরের রুবেল হোসেন, সুলতান মিয়া ও মঞ্জুরুল হক।
৮ মে সোমবার দুপুরে শহরের মাধবপুরস্থ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-১৪’র কমান্ডার মহিবুল ইসলাম খান। একইদিন দুপুরে তাদের শেরপুর সদর থানায় হস্তান্তর করেছে র্যাব।
সংবাদে সম্মেলনে তিনি জানান, গত ২৮ এপ্রিল শেরপুর সদর উপজেলার খুনুয়া চরপাড়া এলাকার মৃত নুর ইসলাম ওরফে হলু শেখের ছেলে ও ৬ সন্তানের জনক মো. উজ্জল মিয়া (৪২) তার ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক নিয়ে ভাড়ায় যাত্রীবহনে বের হয়ে নিখোঁজ হন।
পরদিন ২৯ এপ্রিল সকালে পার্শ্ববর্তী খুনুয়া পশ্চিমপাড়া এলাকার একটি ধানক্ষেতে থেকে উজ্জল মিয়ার লাশ পাওয়া যায় এবং ইজিবাইকটি ছিনতাই করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় নিহতের ভাই সুজন মিয়া বাদী হয়ে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পর থেকেই র্যাব ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং জড়িত আসামিদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে অভিযান চালায়।
পরে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ বিশ্লেষণ করে জামালপুর ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার আশিক উজ্জামানের নেতৃত্বে এবং সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার এম এম সবুজ রানার উপস্থিতিতে র্যাবের একটি দল গত ৭ মে রাজধানী ঢাকার ধামরাই কলেজ রোড থেকে ওই মামলার প্রধান সন্দিগ্ধ মো. শামীম মিয়াকে আটক করে।
শামীমকে জিজ্ঞাসাবাদে সে ইজিবাইক চালক উজ্জল মিয়াকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জানায়, তারা কয়েকজন ইজিবাইক ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে ভীমগঞ্জ হতে দশআনি যাওয়ার জন্য ইজিবাইক ভাড়া করে। যাওয়ার পথে ইজিবাইক চালককে সদর উপজেলার ভীমগঞ্জ বাজারের সাথে ব্রিজের নিচে ইলেক্ট্রিক তার দিয়ে গলায় পেচিয়ে হত্যা করে লাশটি খুনুয়া পশ্চিমপাড়া এলাকায় ধান ক্ষেতের ভেতর ফেলে রেখে ইজিবাইকটি নিয়ে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে ইজিবাইকটি বিক্রির জন্য মো. আবুল হোসেনের কাছে প্রদান করে। আবুল হোসেন তার ভায়রা ভাই মো. রুবেল হোসেনের সহায়তায় মো. সুলতান মিয়ার বসতবাড়ীর ধানের গোলার ভিতর ছিনতাইকৃত ইজিবাইকটির বিভিন্ন পার্টস ও যন্ত্রাংশ লুকিয়ে রাখে এবং ব্যাটারি মঞ্জুরুল ইসলামের কাছে ৩১ হাজার টাকায় বিক্রি করে। পরবর্তীতে তাদের ৪ জনকেই আটক করে র্যাব সদস্যরা।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১৪ জামালপুর ক্যাম্পের কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার আশিক উজ্জামান, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার এম এম সবুজ রানাসহ অন্যান্য কর্মকর্তাগণ ও জেলায় কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।