‘শ্রমিক-মালিক ঐক্য গড়ি, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলি’- এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে শেরপুর জেলা ট্রাক মিনি ট্রাক ড্রাম ট্রাক ট্যাংক লড়ী ও কভার্ড ভ্যান চালক শ্রমিক ইউনিয়নের (রেজি: নং- ৩২৭৭) উদ্যোগে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান মে দিবস ও আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসে র্যালি ও আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে।
এ উপলক্ষে সোমবার (১ মে) সকালে শহরের গোপালবাড়িস্থ পৌর ট্রাক টার্মিনাল চত্ত্বরে শেরপুরে জেলা ট্রাক মিনিট্রাক ড্রামট্রাক ট্র্যাংকলড়ী ও কার্ভাডভ্যান চালক শ্রমিক ইউনিয়নের আয়োজনে শ্রমিকদের বর্ণাঢ্য র্যালি শহর প্রদক্ষিণ করে। র্যালিতে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের সদস্যরা ঢোল, বাদ্যযন্ত্র ও নানা সাজে সজ্জিত হয়ে অংশ নেন। পরে সংগঠনের প্রধান কার্যালয়ে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা ট্রাক মিনিট্রাক ড্রামট্রাক ট্যাংক লড়ী ও কভার্ড ভ্যান চালক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মো: আরিফ রেজা।
এসময় তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাজনৈতিক স্বাধীনতার পাশাপাশি অর্থনৈতিক মুক্তির স্বপ্ন দেখেছিলেন। মহান মে দিবসের ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হয়ে বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন পূরণে দেশের আপামর মেহনতি ও শ্রমজীবী মানুষকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি।
আরিফ রেজা মহান মে দিবস উপলক্ষে শেরপুরের সকল শ্রমজীবী মানুষকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, মে দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ‘শ্রমিক-মালিক ঐক্য গড়ি, উন্নয়নের শপথ করি’ অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান শ্রমিকবান্ধব সরকার এ লক্ষ্যে শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ, শিশুশ্রম বন্ধ, নারী শ্রমিক ও কর্মচারীদের জন্য মাতৃত্বকালীন ছুটির সময় বৃদ্ধি, কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকদের নিরাপত্তাসহ শ্রমিকের স্বাস্থ্যসম্মত কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। আমরা বর্তমান সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। তিনি বলেন, মে দিবস কেবল অধিকার আদায়ের দিন নয়, নিজেদের আত্মবিশ্লেষণ ও সম্মিলিতভাবে দেশ গড়ার অঙ্গীকারও বটে। শ্রমিক-মালিক পারস্পরিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক শ্রমক্ষেত্রে স্থিতিশীলতা রক্ষা ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
আলোচনা সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো: হোসেন আলী। সংগঠনের কার্যকরি সভাপতি ফারুক আহম্মেদের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি আমজাদ হোসেন, সহ-সভাপতি বাদশা মিয়া, জুনিয়র সহ-সভাপতি বদরুজ্জামান বুদু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শ্রী নারায়ণ চক্রবর্তী নাড়ু, সিনিয়র সহ-সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম, সহ-সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক সজীব মিয়া, কোষাধ্যক্ষ জাহিদুল ইসলাম পলাশ, প্রচার সম্পাদক আবুল কালাম সরকার, দপ্তর সম্পাদক আব্দুল হামিদসহ সংগঠনের বিভিন্ন উপ-শাখার নেতৃবৃন্দ ও শ্রমিকগণ উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা সভায় বক্তারা ট্রাক চালক শ্রমিকদের কল্যাণে বিভিন্ন দাবী সমূহ তুলে ধরেন।
দাবি সমূহ হলো : সড়ক পরিবহণ শ্রমিকের নিয়োগপত্র দিতে হবে। সড়ক পরিবহণ আইন ২০১৮ অবিলম্বে সংশোধন করতে হবে। শ্রমিকদের ৮ঘন্টা নিশ্চিত করতে হবে। এক নাগাড়ে গাড়ি চালনা বন্ধ করতে শ্রমিকদের বিনামূল্যে বিশ্রামের ব্যবস্থা করতে হবে। শ্রমিকের নিম্নতম মুজুরি ২৫ হাজার টাকা ঘোষণা করতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্তে পুলিশ ও বুয়েটের বিশেষজ্ঞ যৌথ অংশগ্রহণ চাই। সড়ক দুর্ঘটনায় তদন্ত ব্যতিরেকে শ্রমিকদের গ্রেফতার করা যাবে না। পরিবহণ শ্রমিকদের ডোপটেস্ট সরকারি ব্যবস্থাপনায় বিনামূল্যে করতে হবে। বিআরটিএ এর দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। সড়কে পুলিশি হয়রানি বন্ধ করতে হবে। কর্মক্ষেত্রে আহত হয়ে স্থায়ী পঙ্গু হওয়া শ্রমিকদের পুর্নবাসন করতে হবে।