ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে হেযবুত তওহীদ ও ইত্তেফাকুল উলামার মুসুল্লিদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের জেরে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িসহ পাঁচটি বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। পুরিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নিলেও এলাকায় উত্তেজনা চলছে।
হেযবুত তাওহীদ নামের একটি ধর্মীয় সংগঠন ২০১৭ সাল থেকে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় কাজ করছে। এ সংগঠনটির ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি দায়িত্বে আছেন মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম। নিজেদের সদস্য বৃদ্ধি ও নিজেদের চেতনা ছড়িয়ে দিতে সংগঠনটি এলাকাভিত্তিক নানা কর্মসূচি পালন করে আসছে। তারা পুরুষ সদস্য সংগ্রহের পাশাপাশি নারীদেরকেও উদ্বুদ্ধ করে হেযবুত তাওহীদের আদর্শে পরিচালিত করে আসছে। কিন্তু সম্প্রতি হেযবুত তাওহীদের কার্যক্রম নিয়ে স্থানীয় মুসল্লিদের মধ্যে বিরূপ ধারণা তৈরি হয়। হেযবুত তাওহীদ ইসলাম বিরোধী কার্যক্রম পরিচালনা করে এমন অভিযোগ তুলে লিফলেট পোস্টার সাঁটানো হয় এলাকায়। ইসলাম বাঁচাতে হেযবুত তাওহীদ বিরোধী কর্মসূচিতে অংশ নিতে আহ্বান জানানো হয় তৌহিদী জনতার পক্ষে।
বিগত কিছুদিন ধরে বিষয়টি এলাকায় প্রচার হতে শুরু করলে হেযবুত তাওহীদ নেতাকর্মীদের মধ্যেও আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। এর মধ্যে ইত্তেফাকুল উলামা বৃহত্তর মোমেনশাহীর উচাখিলা শাখার উদ্যোগে হেযবুত তাওহীদের অপতৎপরতার বিরুদ্ধে কর্মসূচির ডাক দেয়। গতকাল বুধবার বেলা তিনটায় উচাখিলা পাট বাজারে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশ শেষে মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে লক্ষীগঞ্জ রোডে যেতেই হেযবুত তাওহীদ ও ইত্তেফাকুল উলামা নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এতে উভয় দু’পক্ষের অন্তত ২০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ৮ জনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দুইপক্ষকে শান্ত করার চেষ্টা করলেও সংঘর্ষ চলে দফায় দফায়। রাজিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান একেএম মুদাব্বিরুল ইসলামের বাসাসহ হেযবুত তাওহীদ সমর্থন করে এমন আরও চারটি বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে।
ইত্তেফাকুল উলামার উচাখিলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আখতারুজ্জামান বলেন, হেযবুত তাওহীদ ইসলাম বিরোধী কার্যক্রম পরিচালনা করায় সাধারণ মানুষকে সুপথে ফেরাতে কর্মসূচি করা হয়। সভা শেষে মিছিল শুরু করতেই ফেসবুক তাওহীদের নেতাকর্মীরা। এতে ১৫ জনের বেশি নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
হেযবুত তাওহীদের ঈশ্বরগঞ্জে উপজেলা শাখার সভাপতি মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম বলেন, ধর্মের দোহাই দিয়ে যারা সন্ত্রাসবাদ করে এসবের বিরুদ্ধেই ফেসবুক তাওহীদের প্রচারণা। গত কিছুদিন ধরেই এলাকায় হেযবুত তাওহীদ বিরোধী প্রচারণা চালাচ্ছিল একটি চক্র। বুধবার তারা যে এলাকায় অবস্থান করছিলেন সে এলাকার দিকে মুসুল্লিরা হামলার জন্য গেলে তারা প্রতিহত করেন। এ সময় তাদের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। বাড়ি ঘর ভাঙচুর করা হয়েছে।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি পিএসএম মোস্তাছিনুর রহমান বলেন, পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ায় সংঘাত বড় হয়নি। এ ঘটনায় হতাহতের কোন তথ্য আমাদের কাছে নেই। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।