সেহেরি খাওয়ার পর মসজিদে ফজরের নামাজ পড়ছিলেন মো.নজরুল ইসলাম (৪০)। প্রথম রাকাআতের নামাজে সূরা মিলানোর পর রুকুতে যেতেই পিছন দিক থেকে এসে দেশীয় রামাদা ও চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে ভাইকে হত্যার অভিযোগ ওঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার ঈশ্বরগঞ্জ সদর ইউনিয়নের চরপুবাইল গ্রামের চরপুবাইল দক্ষিণ পাড়া জামে মসজিদে। নিহত নজরুল ইসলাম ওই গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত বশির উদ্দিনের ছেলে।
জানা যায়, নজরুল ইসলামের সাথে জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিলো তার দুই ভাই জাহাঙ্গীর আলম লিটন ও শামছুল আলম শাহিনের। কিছুদিন আগে বাড়ির একটি গাছ কাটা নিয়ে সেই বিরোধ নতুন মোড় নেয়। পরে গত বুধবার বাড়িতে আসেন নজরুল। বৃহস্পতিবার রাতে এসব নিয়ে তাদের চার ভাইয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। ঘটনার আগে আজ শুক্রবার সেহেরি খাওয়ার পর মসজিদে ফজরের নামাজ পড়ছিলেন নজরুল। প্রথম রাকাআতে রুকুতে যেতেই তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে তার দুই ভাই। মুসল্লিরা তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত নজরুল কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ড্রাইভার হিসেবে চাকুরীরত ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শী মসজিদের ইমাম মোঃ শামিম মিয়া বলেন, মসজিদে আমরা পাঁচজন মুসল্লী ফজরের নামাজ আদায় করছিলাম। ফরজ নামাজের প্রথম রাকাআতের সূরা মিলানোর পর রুকুতে যেতেই লিটন কাকু এসে রামদা দিয়ে কোপানো শুরু করে। পরে শাহিন কাকু এসে মাথায় কোপানো শুরু করে। তখন নজরুল কাকু মসজিদে পড়ে যায়। আমরা কয়েকজন বাঁধা দিতে চাইলে আমাদের আঘাত করে।
এ ঘটনার খবর পেয়ে নিহতের বড় ভাই হুমায়ূন কবির বিপুল (৪৯) তাদের থামাতে গেলে তিনি গুরুতর আহত হয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন। একই ঘটনায় তার দুই ছেলে সাজ্জাত হোসেন (২২), মোঃ জান্নাত (১৭) হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
নিহতের মা ফাতেমা (৮০) কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, আমার কি সর্বনাশ অইলোরে বাবা? নজরুল আমাকে বেশি দেখবাল করতো। আমার কি অইলো? একথা বলেই তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।
এবিষয়ে ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাছিনুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। ঘটনার পর জড়িত দুই ভাই পালিয়ে গেছেন