বহু জল ঘোলার পর অবশেষে পাঁচটি শর্তে বাংলাদেশে উপমহাদেশীয় ভাষায় নির্মিত ছবি আমদানির অনুমতি মিলল। মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত এক প্রজ্ঞাপন জারি করেছে তথ্য মন্ত্রণালয়। তাতে সই করেছেন মন্ত্রণালয়ের চলচ্চিত্র শাখার উপসচিব সাইফুল ইসলাম।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, উপমহাদেশীয় ভাষায় নির্মিত চলচ্চিত্র আমদানি সংক্রান্ত সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মতামত চাওয়া হয়। সেখান থেকে ইতিবাচক মতামত পাওয়ার পর আমদানি নীতি আদেশ ২০২১০২০২৪ এর ২৫ (৩৬) (গ) উপ-অনুচ্ছেদের শর্ত প্রতিপালনপূর্বক বাংলাদেশি চলচ্চিত্র রপ্তানির বিপরীতে দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির (সাফটা) দেশগুলো থেকে উপমহাদেশীয় ভাষায় নির্মিত চলচ্চিত্র আমদানি করার জন্য অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
তবে আমদানির ক্ষেত্রে পাঁচটি শর্তারোপ করা হয়েছে। শর্তগুলো হলো: শুধু বাংলাদেশের বৈধ চলচ্চিত্র প্রযোজক, পরিবেশকরা উপমহাদেশীয় ভাষায় নির্মিত চলচ্চিত্র আমদানি করার সুযোগ পাবেন; উপমহাদেশীয় ভাষায় নির্মিত চলচ্চিত্র সাব-টাইটেলসহ পরীক্ষামূলক শুধু দুই বছরের জন্য রপ্তানির বিপরীতে আমদানি করার সুযোগ থাকবে; প্রথম বছর ১০টি চলচ্চিত্র রফতানির বিপরীতে আমদানি করতে পারবে; আমদানিকৃত উপমহাদেশীয় ভাষার চলচ্চিত্র প্রদর্শনের আগে অবশ্যই বাংলাদেশ ফিল্ম সেন্সর বোর্ডের সনদ গ্রহণ করতে হবে এবং বাংলাদেশে পবিত্র ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা, দুর্গা পূজার সপ্তাহে উপমহাদেশীয় ভাষার কোনো চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা যাবে না।
এর আগে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি দেশে ভারতীয় সিনেমা মুক্তির ব্যাপারে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। সেখানে ভারতীয় সিনেমা দেশে আমদানির বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সে সময় জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আবেদনটি পেশ করবেন তথ্যমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিলেই বাংলাদেশে শর্ত সাপেক্ষে হিন্দি সিনেমা আমদানির দুয়ার উন্মোচিত হবে। অবশেষে মঙ্গলবার তথ্য মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে জানাল, এখন থেকে বছরে ১০টি করে ভারতীয় সিনেমা আমদানি করা যাবে।
এর আগে দেশে হিন্দি সিনেমা মুক্তির ব্যাপারে একমত হয়েছিল চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট ১৯টি সংগঠন। তাদের অনেকেই গত ১৯ ফেব্রুয়ারি তথ্যমন্ত্রীর বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। তারা জানান, দেশে হিন্দি সিনেমা আনার বিষয়ে তাদের কোনো দ্বিমত নেই। প্রতিবছর ১০টি হিন্দি সিনেমা দেশের প্রেক্ষাগৃহে চলবে।
দেশে হিন্দি সিনেমা মুক্তির জোর চেষ্টা শুরু হয়েছিল গত ২৫ জানুয়ারি ভারতসহ বিশ্বের ১০০টি দেশে শাহরুখ খান অভিনীত ‘পাঠান’ সিনেমাটি মুক্তির সময়েই। একই দিনে বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহেও ‘পাঠান’ চালানোর উদ্যোগ নিয়েছিলেন পরিচালক অনন্য মামুন। কিন্তু বাধার মুখে সেটা সম্ভব হয়নি।
অবশেষে সেই বাধা কাটল। এবার সিনেপ্রেমীদের অপেক্ষা, কবে বাংলাদেশে আসবে বলিউডের ‘পাঠান’। শোনা যাচ্ছে, সামনে ঈদে ছবিটি মুক্তি পাবে। যদিও এ খবরের কোনো সত্যতা নেই। বিষয়টি নির্ভর করছে ‘পাঠান’ যিনি আমদানি করতে চান, সেই অনন্য মামুনের ওপর।