ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে গলায় ওড়না পেচিয়ে রিনা খাতুন (২৪) নামে গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার মাইজবাগ ইউনিয়নের হারুয়া গ্রামে।
জানা যায়, শুক্রবার সকালে শরীর খারাপ লাগার কথা বলে মেয়ে তোফামণিকে তার ফুফুর কাছে রেখে ঘরের দরজা লাগায় রিনা খাতুন (২৪)। মেয়ে ঘণ্টাখানেক খেলাধুলা করার পর ঘরে আসে। ঘরে এসে মাকে না পেয়ে কান্না করতে থাকে। মাকে খুঁজতে খুঁজতে আসে তাদের ঘরের বারান্দার রুমে। বন্ধ রুমের দরজায় শব্দ করে কান্না করতে থাকে শিশুটি। তোফামণির কান্নার শব্দ শুনে বাড়ির লোকজন ছুটে আসে। অনেক ডাকাডাকি করেও তোফামণির মায়ের সাড়াশব্দ না পেয়ে পুলিশে কল দেন বাড়ির লোকজন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দরজা ভেঙে ঘরের বারান্দার আড়ার সঙ্গে ঝুলতে থাকা তোফামণির মায়ের লাশ উদ্ধার করে।
শুক্রবার দুপুরে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মাইজবাগ ইউনিয়নের হারুয়া গ্রাম থেকে ওই গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় এলাকায় নেমে এসছে শোকের ছায়া।
রিনা খাতুন পার্শ্ববর্তী নান্দাইল উপজেলার মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের কুতুবপুর গ্রামের দুলাল মিয়ার মেয়ে। সাত বছরের আগে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মাইজবাগ ইউনিয়নের হারুয়া গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে মোঃ সোহাগ মিয়ার সাথে তার বিয়ে হয়। তাদের ঘর আলোকিত করে আসে শিশু তোফামণি। শিশুটির বয়স আড়াই বছর।
রিনার শ্বশুর হাবিবুর রহমান জানান, গত ছয় থেকে সাত মাস ধরে আমার ছেলের বউয়ের মাথায় সমস্যা ছিলো। মাথায় প্রচন্ড ব্যাথা ও শরীর জ্বালা পোড়া করতো। অনেক ডাক্তার দেখিয়ে কোন লাভ হয়নি। ঘটনার দিন সকালে আমি গরুর জন্য ঘাস কাটতে গেলে খবর পাই রিনার ঘরের দরজা বন্ধ। কোন সাড়াশব্দ নেই। আমি দৌড়ে এসে দরজার ফাঁক দিয়ে দেখি তার লাশ ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলছে। পরে আমরা ৯৯৯-এ ফোন দিলে পুলিশ এসে ঘরের দরজা ভেঙে লাশ উদ্ধার করে। আমার ধারণা আমার পুত্রবধু মাথার ব্যাথার যন্ত্রণা সইতে না পেরে গলায় ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করে।
রিনার বাবা দুলাল মিয়া বলেন, মারা যাওয়ার আগের রাতেও আমার মেয়েকে আমি কবিরাজি চিকিৎসা করিয়েছি। কীভাবে চলে গেলো আমার মেয়ে। একথা বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পিএসএম মোস্তাছিনুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল রুজু করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।